সার্টিফিকেট/পাসপোর্ট/আইডি কার্ড /মোবাইল হারিয়ে গেলে থানায় জিডি করার নিয়ম?

 

জিডি কী?

জিডি (GD) এর পূর্ণরুপ হল জেনারেল ডায়েরি (General Diary); যাকে বাংলায় বলে সাধারণ ডায়েরি। আইনি সহায়তা পেতে চাইলে কোনো বিষয়ে যে সাধারণ বিবরণ দিতে হয় তাই হলো জিডি। এটি পুলিশি বা আইনি পদক্ষেপের প্রথম ধাপ।  যেকোনো বিষয়ে ভবিষ্যতে আইনি পদক্ষেপ নিতে হলেও জিডি করে রাখাটা জরুরী।

জিডি কখন করবেন?

জিডি সাধারণত করা হয় কেউ বা কিছু হারিয়ে গেলে অথবা অপরাধমূলক কিছু ঘটার সম্ভাবনা থাকলে। গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র যেমনঃ প্রাতিষ্ঠানিক সনদ,  জন্ম নিবন্ধন সনদ, জাতীয় পরিচয় পত্র সহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পরিচয় পত্র, দলিল অথবা মূল্যবান বস্তু যেমন মোবাইল ফোন, স্বর্ণের গহনা ইত্যাদি হারিয়ে গেলে থানায় জিডি করা যায়। এমনকি কোনো ব্যাক্তি ২৪ ঘন্টার বেশি নিরুদ্দেশ থাকলেও থানায় জিডি করা যায়। এর পাশাপাশি কোনো অপরাধ সংগঠনের সম্ভাবনা থাকলে জিডি করতে পারবেন। যেমনঃ কেউ আপনাকে হুমকি দিলে জিডি করার সুযোগ রয়েছে। আপনি আপনার ও আপনার পরিবারের নিরাপত্তার ব্যাপারে শংকা প্রকাশ করে থানায় জিডি করতে পারেন।

থানায় জিডি করার নিয়ম

জিডি করার প্রক্রিয়াটি বেশ সহজ ও সরল। তবে জিডি করার সময় একটি বিষয় সবচেয়ে গুরুত্বের সাথে মাথায় রাখতে হবে৷ সেটি হলো অপরাধ সংগঠনের স্থান যেই থানার মধ্যে পড়ে সেই থানাতেই জিডি করতে হবে। যেমনঃ যদি আপনার কোনো গুরুত্বপূর্ণ কাগজ পল্লবী থানার অর্ন্তগত অঞ্চল থেকে হারিয়ে যায় তাহলে পল্লবী থানাতেই আপনার জিডিটি করতে হবে। এই ব্যাপারে অন্য কোন থানা আপনাকে সহায়তা করবে না। তাই পথিমধ্যে কোনো দূর্ঘটনা ঘটলে ওই স্থান কোন থানার মধ্যে সেই তথ্য বের করুন। এরপর ওই থানাতেই জিডি করুন।

জিডির ব্যাপারে আপনার আরো কিছু নিয়ম মাথায় রাখতে হবে। যেমন জিডি করতে হলে আপনাকে অবশ্যই ১৮ বছরের উর্ধ্বে হতে হবে। প্রাপ্তবয়স্ক যেকোনো বাংলাদেশী নাগরিক থানায় গিয়ে স্বাভাবিক ভাবে জিডি করতে পারবে। উল্লেখ্য যে জিডি করার কোনো নির্দিষ্ট সময়সীমা নেই। সপ্তাহে ৭ দিন ২৪ ঘন্টাই প্রতিটি থানাতে জিডি গ্রহণ করা হয়। তাই যেকোনো সময়ই জিডি করতে পারবেন। তবে ঘটনা ঘটার পর যত দ্রুত সম্ভব জিডি করা উচিত। কারণ পরবর্তীতে দীর্ঘ আইনী প্রক্রিয়ায় যেতে হলে জিডি করার সময়টা বেশ গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব রাখবে।

থানায় যাওয়ার পর দায়িত্বরত কর্মকর্তার কাছে জিডি করার ইচ্ছা প্রকাশ করতে হবে। এরপর তাকে বিস্তারিত মৌখিক বিবরণ দিতে হবে। এ সময় তিনি কোনো প্রশ্ন করলে সেগুলোর সঠিক উত্তর দিতে পারাটা জরুরী। মৌখিক পর্বের পর দায়িত্বরত কর্মকর্তা আপনাকে জিডি করার কাগজ এগিয়ে দেবেন। এতে আপনাকে মূলত একটি দরখাস্ত লিখতে হবে। লেখার আগে চাইলে পুলিশ কর্মকর্তার কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে নিতে পারেন। উল্লেখ্য যে অনেক সময় কর্মকর্তা ব্যস্ত না থাকলে আবেদনটি নিজেই লিখে দেন। আবার আপনি লিখতে অপারাগ হলেও তাকে লিখে দিতে অনুরোধ করতে পারেন। এর জন্য আলাদা কোনো টাকা দেওয়ার প্রয়োজন নেই। 

জিডির দরখাস্ত লেখার নিয়ম 

জিডির দরখাস্ত আপনি নিজে লিখতে চাইলে কিভাবে লিখবেন তা ধাপে ধাপে বর্ণনা করা হলোঃ

১) তারিখ লিখে দরখাস্তটি শুরু করতে হবে। দরখাস্তটি লিখবেন সংশ্লিষ্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অর্থাৎ অফিসার ইনচার্জ (OC – Officer In Charge) বরাবর। তার নিচে থানার নাম ও জেলা/মেট্রোপলিটনের নাম।

২) বিষয় হিসেবে লিখবেন “জিডি করার আবেদন”। 

৩) জনাব দ্বারা সম্বোধন করে প্রথমেই আপনার নাম, বয়স, জাতীয় পরিচয় পত্র নং, পিতার নাম, থানা ও জেলার নাম লিখবেন। অতঃপর আপনি যেই বিষয়ে জিডি করতে চান তা উল্লেখ করবেন। দরখাস্তের মূল অংশে এ সম্পর্কিত বিস্তারিত বিবরণ দেবেন ।

৪) যদি কোনো কিছু হারিয়ে যাওয়ার জন্য জিডি করতে চান তাহলে অবশ্যই হারানো জিনিসের নিখুঁত বর্ণনা দেবেন। হারানোর স্থান ও সময় নির্ভুল ভাবে উল্লেখ করবেন। এটি খুবই জরুরী। সম্ভব হলে বস্তুটি সম্পর্কে সাধারণ তথ্যের পাশাপাশি তা শনাক্ত করা যায় এমন কোনো তথ্য দেবেন। 

৫) যদি কারো হুমকি পেয়ে থানায় জিডি করতে যান তাহলে অবশ্যই হুমকিদাতার নাম, সম্পূর্ণ বিবরণ ও ঠিকানা উল্লেখ করবেন। একই সাথে হুমকির তারিখ ও সময় লিখবেন। এ সংক্রান্ত জিডি করতে একজন সাক্ষীর নাম ও ঠিকানাও সাথে লিখতে হবে। 

৬) সর্বশেষে ডায়েরি নথিভুক্ত করার এবং এর সুষ্ঠু তদন্ত করার অনুরোধ করবেন। 

৭) দরখাস্তের শেষে ‘বিনীত’ লিখে নিজের নাম লিখবেন। অতঃপর পিতা/স্বামীর নাম, মাতার নাম, বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা এবং মোবাইল নম্বর লিখবেন।

সঠিক ভাবে দরখাস্ত লেখা শেষ হলে তা দায়িত্বরত কর্মকর্তার হাতে দেবেন। সাধারণত এ বিষয়গুলো একজন এসআই অথবা একজন এএসআই দেখে থাকেন। তিনি দরখাস্তটি ভাল ভাবে পড়ে দেখবেন। যদি বড় কোনো ভুল করে থাকেন তাহলে তা আবার লিখতে হতে পারে। যদি সব ঠিক থাকে তাহলে থানার নথিতে জিডিটি তালিকাভুক্ত হবে। তালিকাভুক্ত করে জিডির কপিতে সিল, স্বাক্ষর, তারিখ ও জিডির নম্বরসহ এক কপি আবেদনকারী অর্থাৎ আপনাকে দেওয়া হবে।

থানায় নথিভুক্ত করা মানে আপনার জিডিটি সফল ভাবে হয়েছে। আপনাকে জিডির যেই কপি বা প্রতিলিপি দেওয়া হবে তা অত্যন্ত যত্নের সাথে সংরক্ষণ করুন। বিশেষ করে জিডির নম্বরটি অত্যন্ত জরুরী। পুরো প্রক্রিয়া শেষ হলে দায়িত্বরত কর্মকর্তাকে ধন্যবাদ দিয়ে বের হয়ে আসুন। 

জিডির নমুনা দরখাস্ত 

উপরে সকল প্রকার জিডি করার একটি সাধারণ নিয়ম বর্ণনা করেছি। কিন্তু লেখার এই অংশে বিশেষ ভাবে কিছু  নমুনা দরখাস্ত দেওয়া হলো। বর্তমানে বহুল প্রচলিত যেসব বিষয়ে জিডি হয়ে থাকে সেগুলোই নমুনা হিসেবে বেছে নেওয়ার চেষ্টা করেছি।

মোবাইল হারিয়ে গেলে জিডি করার নিয়ম 

বর্তমানে মোবাইল ফোনের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় প্রতিদিনই কেউ না কেউ মোবাইল হারাচ্ছেন। এ নিয়ে থানাতে জিডিও হচ্ছে প্রচুর। নিচে মোবাইল হারিয়ে গেলে কিভাবে জিডি করবেন তার একটি নমুনা দেওয়া হলোঃ 

বরাবর,

অফিসার ইনচার্জ,

……… থানা, ……… (জেলা/মেট্রো এর নাম)।

বিষয়ঃ সাধারণ ডায়েরি করার আবেদন প্রসঙ্গে।

জনাব

বিনীত নিবেদন এই যে, আমি নিম্নস্বাক্ষরকারী, নামঃ ——- ,জাতীয় পরিচয়পত্র নংঃ ——– , বয়সঃ —– , পিতা/স্বামীঃ —— , ওয়ার্ডঃ —— , থানাঃ ——- , জেলাঃ ……… এই মর্মে জানাচ্ছি যে, আমার নিম্নবর্ণিত জিনিস আজ/গতকাল ——- তারিখঃ ——- , সময়ঃ ——- যায়গা থেকে হারিয়ে গেছে।

আমার হারানো বস্তুটি একটি মোবাইল ফোন। এটির কোম্পানি ‘Xiaomi’। এর মডেল নং ‘Redmi Note 4’। মোবাইলটির রঙ কালো। এর IMEI নম্বরঃ ————- । মোবাইলটিতে আমার আত্নীয়-স্বজন ও নানা পরিচিত জনের ফোন নম্বর রয়েছে। এ ছাড়াও তাতে আমার জিমেইল অ্যাকাউন্ট লগইন করা রয়েছে। আমার যাবতীয় ব্যাক্তিগত ছবি, নোট এই ফোনটির মধ্যে রয়েছে। ফোনটি যদি কোনো অসৎ ব্যাক্তির হাতে পড়ে এবং তা দিয়ে যদি কোনো অপরাধ সংগঠিত হয় তা নিয়ে আমি বিশেষ চিন্তিত আছি। তাই থানাতে আমার উক্ত ফোনটি হারানোর ব্যাপারে অবহিত করতে এসেছি।

অতএব, মহোদয় বিষয়টি সাধারণ ডায়েরিভুক্ত করে উপযুক্ত আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ করছি। 

বিনীত

————– 

পিতা/স্বামীঃ ———–

মাতাঃ ———–

বর্তমান ঠিকানাঃ ———– 

স্থায়ী ঠিকানাঃ ———-

মোবাইল নম্বরঃ ———-

পাসপোর্ট হারিয়ে গেলে জিডি করার নিয়ম 

পাসপোর্ট। একটি গুরুত্বপূর্ন  ডকুমেন্ট । জাতিয়  পরিচয় পত্র এর মতোই এটি আপনার পরিচয় পত্র হিসেবে অনেক ক্ষেত্রেই ব্যবহৃত হয়। এছাড়া বিদেশ যাওয়ার ক্ষেত্রে পাসপোর্টের কোনো বিকল্প নেই। তাই পাসপোর্ট হারিয়ে গেলে তাৎক্ষণিক থানায় জিডি করা উচিত। কারণ পাসপোর্ট হারিয়ে গেলে তা নতুন করে উঠাতে গেলে অবশ্যই জিডির কপি দাখিল করতে হবে। নিচে পাসপোর্ট হারিয়ে গেলে কিভাবে জিডি করবেন তার নমুনা দেওয়া হলো

বরাবর,

অফিসার ইনচার্জ

……… থানা, ……… (জেলা/মেট্রো এর নাম)

বিষয়ঃ সাধারণ ডায়েরি করার আবেদন প্রসঙ্গে।

জনাব

বিনীত নিবেদন এই যে, আমি নিম্নস্বাক্ষরকারী, নামঃ ——- ,জাতীয় পরিচয়পত্র নংঃ ——– , বয়সঃ —– , পিতা/স্বামীঃ —— , ওয়ার্ডঃ —— , থানাঃ ——- , জেলাঃ ……… এই মর্মে জানাচ্ছি যে, আমার নিম্নবর্ণিত জিনিস আজ/গতকাল ——- তারিখঃ ——- , সময়ঃ ——- যায়গা থেকে হারিয়ে গেছে।

আমার হারানো বস্তুটি একটি ই-পাসপোর্ট। আমি গত ——– তারিখে ই-পাসপোর্টের জন্য আবেদন করি। সকল প্রক্রিয়া শেষ হলে ——— তারিখে আগারগাঁও পাসপোর্ট অফিস থেকে ই-পাসপোর্ট ডেলিভারি দেওয়া হয়। পাসপোর্টটির পাসপোর্ট নং ———-  । ব্যাক্তিগত নং ———– । পাসপোর্টটির পৃষ্ঠা সংখ্যা ৬৪। মেয়াদ ১০ বছর। মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ ———- ।  পাসপোর্টটিতে কোনো দেশের ভিসা নেই / পাসপোর্টটিতে ——- দেশের ভিসা রয়েছে। এই পাসপোর্টটি আমার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়াও আমার পাসপোর্ট কোনো অসৎ ব্যাক্তির হাতে পড়ে কি না তা নিয়ে আমি শঙ্কিত আছি। তাই পাসপোর্ট হারিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে থানায় অবগত করতে এসেছি। আবেদনপত্রের সাথে আমার পাসপোর্টের পরিচয় পাতার দুইটি ফটোকপি যুক্ত করেছি।

অতএব, মহোদয় বিষয়টি সাধারণ ডায়েরিভুক্ত করে উপযুক্ত আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ করছি। 

বিনীত, 

————– 

পিতা/স্বামীঃ ———–

মাতাঃ ———–

বর্তমান ঠিকানাঃ ———– 

স্থায়ী ঠিকানাঃ ———-

মোবাইল নম্বরঃ ———- 

সার্টিফিকেট হারিয়ে গেলে জিডি করার নিয়ম 

একজন ব্যাক্তি তার জীবনে অসংখ্য সার্টিফিকেট সংগ্রহ করতে পারে। কিন্তু কিছু সার্টিফিকেট এর মূল্য স্বভাবতই অন্যগুলোর তুলনায় বেশি। যেমন আপনার এসএসসি, এইচএইচসির বা বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্টিফিকেট। এসব সার্টিফিকেট হারিয়ে গেলে শিক্ষা বোর্ড বা নিজ প্রতিষ্ঠান থেকে নতুন করে তোলা অনেকটাই ঝামেলার। এবং নতুন সার্টিফিকেট তুলতে চাইলে আগের সার্টিফিকেট হারিয়ে গিয়েছে তার প্রমাণ দেখাতে হয়। সেই প্রমাণটি হলো থানার জিডি। তাই চলুন জেনে নেওয়া যাক সার্টিফিকেট হারিয়ে গেলে সে সম্পর্কে কিভাবে থানায় জিডি করবেন।

বরাবর,

অফিসার ইনচার্জ,

……… থানা, ……… (জেলা/মেট্রো এর নাম)।

বিষয়ঃ সাধারণ ডায়েরি করার আবেদন প্রসঙ্গে। 

জনাব

বিনীত নিবেদন এই যে, আমি নিম্নস্বাক্ষরকারী, নামঃ ——- ,জাতীয় পরিচয়পত্র নংঃ ——– , বয়সঃ —– , পিতা/স্বামীঃ —— , ওয়ার্ডঃ —— , থানাঃ ——- , জেলাঃ ……… এই মর্মে জানাচ্ছি যে, আমার নিম্নবর্ণিত জিনিস আজ/গতকাল ——- তারিখঃ ——- , সময়ঃ ——- যায়গা থেকে হারিয়ে গেছে।

আমার হারানো বস্তুটি একটি সার্টিফিকেট। এটি আমার ২০১৮ সালের এসএসসি তথা মাধ্যমিক পরীক্ষার সার্টিফিকেট। হারানোর সময় সার্টিফিকেটটি একটি সবুজ রঙের ফাইলে ছিল। ফাইলের ভেতরে উক্ত সার্টিফিকেটরই আরো ৪টি ফটোকপি ছিল। সার্টিফিকেটে উল্লিখিত আমার নাম ———— । আমার পিতার নাম ———– । আমার মাতার নাম ————– ।  সার্টিফিকেটটির সিরিয়াল নং ———— । রেজিস্ট্রেশন নং ———- । রোল নং ———— । শিক্ষা জীবনে আমার এই সার্টিফিকেটটির মূল্য অসীম। তাই হারানোর পর যত দ্রুত সম্ভব এ ব্যাপারে থানায় অবগত করতে এসেছি। আবেদনপত্রের সাথে সার্টিফিকেটটির দুইটি ফটোকপি যুক্ত করেছি।

অতএব, মহোদয় বিষয়টি সাধারণ ডায়েরিভুক্ত করে উপযুক্ত আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ করছি। 

বিনীত

————– 

পিতা/স্বামীঃ ———–

মাতাঃ ———–

বর্তমান ঠিকানাঃ ———– 

স্থায়ী ঠিকানাঃ ———-

মোবাইল নম্বরঃ ———- 

আইডি কার্ড হারিয়ে গেলে জিডি করার নিয়ম

আইডি কার্ড তথা পরিচয় পত্র আপনার পরিচয়কে নিশ্চিত করে। আইডি কার্ড সাধারণত কোনো প্রতিষ্ঠান বা সংগঠনের হয়ে থাকে। আইডি কার্ড আপনার সাথে সেই প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্টতাকে নির্দেশ করে। শিক্ষা অথবা চাকুরি উভয় ক্ষেত্রেই দৈনন্দিন জীবনে আইডি কার্ডের প্রয়োজন। এছাড়াও অনেক প্রতিষ্ঠানই ছাত্র অথবা কর্মচারীদের আইডি কার্ড হারানোকে বেশ গুরুত্বের সাথে দেখেন। এমন বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান আছে যারা জিডির কপি ছাড়া নতুন আইডি কার্ড ইস্যু করে না। তাই এই লেখাতে আইডি কার্ড হারিয়ে গেলে কিভাবে জিডির দরখাস্ত করবেন তার নমুনা সংযুক্ত করা হয়েছে। 

বরাবর,

অফিসার ইনচার্জ,

……… থানা, ……… (জেলা/মেট্রো এর নাম)।

বিষয়ঃ সাধারণ ডায়েরি করার আবেদন প্রসঙ্গে। 

জনাব

বিনীত নিবেদন এই যে, আমি নিম্নস্বাক্ষরকারী, নামঃ ——- ,জাতীয় পরিচয়পত্র নংঃ ——– , বয়সঃ —– , পিতা/স্বামীঃ —— , ওয়ার্ডঃ —— , থানাঃ ——- , জেলাঃ ……… এই মর্মে জানাচ্ছি যে, আমার নিম্নবর্ণিত জিনিস আজ/গতকাল ——- তারিখঃ ——- , সময়ঃ ——- যায়গা থেকে হারিয়ে গেছে।

আমার হারানো বস্তুটি একটি আইডি কার্ড। আমি বর্তমানে ———– কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র হিসেবে অধ্যয়নরত আছি। আমার হারানো আইডি কার্ডটি উক্ত প্রতিষ্ঠানের সাথে আমার সংশ্লিষ্টতা প্রমাণ করে। আইডি কার্ডটির ফিতার রঙ ——- । আইডি কার্ডে উল্লেখিত আমার নাম ——— । মোবাইল নম্বর ——— । কলেজ রোল ———-। উক্ত আইডি কার্ডটি আমার ছাত্রত্ব প্রমাণের একটি নিয়ামক। দৈনন্দিন ভিত্তিতে আমার আইডি কার্ডটির প্রয়োজন হয়ে থাকে। কিন্তু আইডি কার্ড হারিয়ে যাওয়ার আমি নানাবিধ সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছি। নতুন আইডি কার্ড পেতে হলেও আমার প্রতিষ্ঠানের নিয়ম অনুযায়ী থানায় জিডি করা বাধ্যতামূলক। এছাড়াও আমার আইডি কার্ড কোনো অবৈধ কার্যক্রমে সংশ্লিষ্ট হতে পারে বলে আমি শংকিত আছি। তাই থানায় এ বিষয়ে অবগত করতে এসেছি। আবেদনপত্রের সাথে আমার আইডি কার্ডের দুইটি ফটোকপি সংযুক্ত করেছি।

অতএব, মহোদয় বিষয়টি সাধারণ ডায়েরিভুক্ত করে উপযুক্ত আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ করছি। 

বিনীত

————– 

পিতা/স্বামীঃ ———–

মাতাঃ ———–

বর্তমান ঠিকানাঃ ———– 

স্থায়ী ঠিকানাঃ ———-

মোবাইল নম্বরঃ ———-

অনলাইন জিডি

বাংলাদেশ পুলিশের সর্বদা আধুনিক হওয়ার প্রচেষ্টার এক নিদর্শন এই অনলাইন জিডি। সম্পূর্ণ ডিজিটাল প্রক্রিয়ায় অর্থাৎ থানায় স্বশরীরে উপস্থিত না হয়েই অনলাইনে এখন জিডি করা সম্ভব। একেই বলে অনলাইন জিডি। তবে বর্তমানে অনলাইন জিডি শুধু হারানো ও প্রাপ্তি সম্পর্কে করা যায়। এছাড়াও এই সুবিধা এখনো সব থানায় চালু হয় নি৷ নিম্নোক্ত থানাগুলো অনলাইন জিডি এর আওতায় রয়েছে।

  • সূত্রাপুর থানা (ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ)
  • কলাবাগান থানা (ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ)
  • ক্যান্টনমেন্ট থানা (ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ)
  • ময়ময়নসিংহ সদর থানা।
  • ভালুকা থানা।

অনলাইনে জিডি করার নিয়ম 

অনলাইনে জিডি করতে হলে প্রথমেই আপনাকে চলে যেতে হবে বাংলাদেশ পুলিশের অনলাইন জিডির সাইটঃ http://gd.police.gov.bd/ । 

অনলাইনে জিডি করতে আপনার প্রয়োজন হবে শুধু তিনটি জিনিসের। আপনার জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর, আপনার সচল মোবাইল নম্বর এবং আপনার জন্ম তারিখ। সাইটে ঢুকলেই প্রথম ধাপে এই তিনটি তথ্য দিয়ে ‘জমা দিন’ বাটনে ক্লিক করলেই পরবর্তী ধাপে চলে যাবেন।অনলাইনে জিডি করার নিয়ম ১

পরবর্তী ধাপে আপনার মোবাইল নম্বরে একটি কোড পাঠানো হবে। কোডটি সাইটে প্রবেশ করান।

অনলাইনে জিডি করার নিয়ম ২‘সাবমিট’ বাটনে ক্লিক করার পর আপনি নিচের চিত্রের মতো পরবর্তী পেজে চলে যাবেন।

অনলাইনে জিডি করার নিয়ম ৩

এবার এই পেজে আপনাকে বেশ কিছু তথ্য প্রবেশ করাতে হবে।

১) প্রথমেই ‘আবেদনকারী’ সেকশনে নিজের জন্য জিডি করবেন না অন্যের পক্ষে জিডি করবেন তা নির্ধারণ করুন।

২) ’ জিডির ধরন’ সেকশনে কোনো কিছু হারিয়ে গেলে ‘হারানো/নিখোঁজ’ নির্ধারণ করুন। কোনো কিছু পেয়ে থাকলে ‘পাওয়া’ নির্ধারণ করুন।

৩) কি হারিয়েছেন সেকশনে কি ধরনের বস্তু হারিয়েছেন তা নির্ধারণ করে দিন। প্রত্যেকটি অপশনের জন্য বামপাশে বস্তুটির ধরণ নির্ধারণের স্থান রয়েছে। যেমন ডকুমেন্ট/প্রোডাক্ট নির্ধারণ করলে এরপর পাশের ড্রপডাউন মেনু থেকে কি ধরনের ডকুমেন্ট বা প্রোডাক্ট হারিয়েছে তা নির্ধারণ করুন। যেমনঃ এসএসসি, এইচএইচসির সার্টিফিকেট, জাতীয় পরিচয়পত্র, মোবাইল ফোন ইত্যাদি।

৪) যেই থানায় জিডি করতে চান সেই থানার জেলা/মেট্রো ও থানার নাম নির্ধারণ করুন।

৫) ঘটনার সময় উল্লেখ করে দিন।

অতঃপর ‘পরবর্তী ধাপ’ বাটন ক্লিক করে পরবর্তী ধাপে যান। পরবর্তী ধাপটি দেখতে নিচের চিত্রের মতো হবে।

অনলাইনে জিডি করার নিয়ম ৪এই পেজে আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্যাবলী ইতোমধ্যে পূরণ করা থাকবে। যেমন আপনার ও আপনার পিতা-মাতার নাম, স্থায়ী ঠিকানা ও জাতীয় পরিচয় পত্র নং। বর্তমান ঠিকানাও পূরণ করা থাকবে। তবে চাইলেই তা পেজটির প্রথম ঘর থেকে পরিবর্তন করতে পারবেন। দ্বিতীয় ঘরে যে ঘটনার কারণে জিডি করছেন সেই ঘটনা ঘটার স্থান উল্লেখ করতে হবে। তৃতীয় ফাঁকা ঘরে ঘটনা সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা লিখতে হবে। অতঃপর জিডি সম্পর্কিত ফাইল যুক্ত করতে হবে। যেমন ফোন এর ছবি কিংবা হারানো সার্টিফিকেট এর স্ক্যানড কপি। ফাইল সাইজ ২০০ কিলোবাইটের বেশি হতে পারবে না। এছাড়াও আপনার স্বাক্ষরের স্ক্যানড কপিও আপলোড করতে হবে। এর সাইজও সর্বোচ্চ ২০০ কিলোবাইট হতে পারবে। মোবাইল নং এর স্থানে যেই মোবাইল নং দিয়ে আবেদন করেছেন সেটিই থাকবে। সবার শেষে আপনাকে ইমেইল প্রবেশ করা হবে। অতঃপর ‘সাবমিট’ বাটনে ক্লিক করলেই অনলাইন জিডি করার প্রক্রিয়া শেষ হবে।

অনলাইন জিডির অবস্থা যাচাই

অনলাইন জিডির অবস্থা যাচাই এরও সুবিধা রয়েছে উক্ত সাইটটিতে। জিডির অবস্থা যাচাই করতে আপনাকে সাইটের ‘লগইন’ ট্যাবে চলে যেতে হবে। অতঃপর ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করতে হবে। এখানে ইউজার আইডি হলো জিডি করার সময় যেই মোবাইল নম্বরটি দিয়েছেন সেটিই। অপরদিকে মোবাইল নম্বর ভেরিফাই করার সময় মোবাইলে যেই কোডটি পাঠানো হয়েছিলো সেটিই আপনার পাসওয়ার্ড। তাই উক্ত কোডটি আর দশটি ওটিপি (OTP) এর মতো অবহেলা করবেন না। যত্ন করে সংরক্ষণ করুন। তবে কোন কারণে ম্যাসেজটি মুছে গিয়ে থাকলে ‘পাসওয়ার্ড ভুলে গিয়েছেন’ বাটনে চাপ দিন। এছাড়াও জিডির ট্র্যাকিং নম্বর ব্যবহার করে চাইলে জিডিটি ট্র্যাকও করতে পারবেন।

অনলাইন জিডির অবস্থা যাচাই

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে জিডি

এই পুরো লেখাটিতে জিডি করার নিয়ম সম্পর্কে বেশ বিস্তারিত বলা হয়েছে। পূর্বেই বলেছি যে জিডি করতে হলে ঘটনা যেই থানার অধীনে ঘটেছে সেই থানাতেই জিডি করতে হবে। এই নিয়মের কোন নড়চড় হয় না। যদি দূরবর্তী কোনো স্থানে কিছু হারিয়ে এসে পরবর্তীতে আপনার বাসার কাছের থানায় জিডি করতে চান তাহলে তা সম্ভব নয়। সেক্ষেত্রে আপনাকে ঘটনা ঘটার স্থান বদলে দিতে হবে। যা অবৈধ। কিন্তু এসবের ব্যাতিক্রম হলো ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন। এ আইনের সাহায্যে আপনি বাংলাদেশের যেকোনো থানা থেকে জিডি করতে পারবেন।

ধরা যাক, আপনার একটি ফোন ঢাকা থেকে খুলনা যাওয়ার পথে মাওয়া ঘাটে হারিয়ে গিয়েছে। নদীপাড়ের ঝামেলায় আপনি তাৎক্ষণিকভাবে নিকটস্থ থানায় জিডি করতে পারেন নি। পরবর্তীতে যদি আপনি জিডি করতে চান তাহলে কিন্তু ঐ থানাতেই জিডি করতে হবে। কিন্তু যদি হারিয়ে যাওয়া ফোনটিতে আপনার জিমেইল আইডি সাইন ইন করা থাকে তাহলে আপনি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি জিডি করতে পারবেন। এবং সেই জিডি বাংলাদেশের যেকোনো থানাই গ্রহণ করবে। উক্ত জিডিতে আপনি আপনার ফোন হারিয়ে যাওয়ার ঘটনা উল্লেখ করে সেই ফোনটিতে আপনার জিমেইল লগইন ছিল তা লিখতে পারেন। এতে করে আপনার ফোন হারানোর জিডি হবে না। কিন্তু ঐ জিমেইল দিয়ে যদি কোনো বেআইনী কাজ করা হয় তবে আপনি তার দায়ভার থেকে সহজে মুক্তি পেতে পারবেন। একই সাথে উক্ত জিডিতে আপনার ফোন হারানোর বিষয়টিও উল্লিখিত থাকবে। ঠিক এভাবেই ডিজিটাল আইনে জিডি করার মাধ্যমে আপনি ডিজিটাল মিডিয়াতে হয়রানির হাত থেকে নিরাপদ থাকতে পারবেন।

জিডি করার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও খরচ

জিডি করতে কোনো কাগজের প্রয়োজন হবে কিনা তা আসলে নির্ভর করবে কি বিষয়ে জিডি করবেন তার ওপরে। তবে যেকোনো জিডি করতে গেলে অবশ্যই সাথে আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র রাখতে হবে।

যদি আপনার মোবাইল বা অন্য কোন মূল্যবান বস্তু হারিয়ে যায় তবে তা কেনার রশিদের ফটোকপি জিডির সাথে দাখিল করতে পারেন। তবে তা বাধ্যতামূলক নয়। আবার কোনো জরুরী কাগজ যেমন সনদ বা পরিচয়পত্র হারিয়ে গেলে তার দুই কপি ফটোকপি জমা দিতে পারলে ভাল। একই ভাবে কেউ আপনাকে ডিজিটাল মিডিয়ায় হুমকি দিলে তার প্রিন্ট আউট কপিও জমা দিতে পারেন। অর্থাৎ জিডি করতে জাতীয় পরিচয়পত্র বাদে অন্য কাগজের জরুরী প্রয়োজন পড়তে পারে আবার নাও পড়তে পারে।

উল্লেখ্য একজন বাংলাদেশী নাগরিকের বাংলাদেশের যেকোনো থানায় জিডি করতে ০ টাকার প্রয়োজন। জিডি সম্পূর্ণ বিনামূল্যের একটি সরকারি সেবা।

জিডি ও এফআইআর/এজাহার এর মধ্যে পার্থক্য 

জিডি সম্পর্কে এই পুরো লেখাতে বিস্তারিত জেনেই ফেললেন। কিন্তু জিডি সম্পর্কে জানার পাশাপাশি অবশ্যই এজাহার সম্পর্কেও ধারণা থাকা জরুরী। কারণ জিডি করতে গিয়ে এজাহার করলে অথবা এজাহার করার মতো ঘটনায় জিডি করলে তা বেশ সমস্যাদায়ক হতে পারে। পূর্বেই বলেছি জিডি হলো সাধারণ বিবরণ। অপর দিকে এফআইআর (FIR) হলো মামলার প্রথম পদক্ষেপ। এর পূর্ণরুপ হলো ফার্স্ট ইনফরমেশন রিপোর্ট (First Information Report)। একেই বাংলাতে বলে এজাহার। এজাহার করার মাধ্যমে আপনি থানাতে একটি মামলা দায়ের করেন। উল্লেখ্য যে জিডি থেকেও পরবর্তীতে মামলা করা যায়। কিন্তু জিডি করা মানেই মামলা করা না। কিন্তু এফআইআর বা এজাহার করা মানেই মামলা করা। 

একটি সহজ উদাহরণ দিলে আশা করি জিডি ও মামলার পার্থক্য পুরোপুরি পরিষ্কার হয়ে যাবে। ধরা যাক আপনার একটি মোবাইল ফোন হাতছাড়া হয়েছে। এখন নিকটস্থ থানায় যদি আপনি মোবাইল ফোন হারানো গিয়েছে বলে উল্লেখ করেন তবে তা হবে জিডি। অপর দিকে যদি মোবাইল ফোন চুরি হয়েছে বলে উল্লেখ করতে চান তাহলে করতে হবে এজাহার অর্থাৎ মামলা। হারানো গিয়েছে লেখার মাধ্যমে আপনি সাধারণ বিবরণ দেবেন। অপর দিকে চুরি হয়েছে লেখার মাধ্যমে আপনি একটি ইতোমধ্যে সংগঠিত অপরাধ সম্পর্কে জানাবেন ও প্রতিকার চাবেন। তাই আশা করি কখন জিডি করবেন আর কখন এজাহার করবেন তা আপনাদের কাছে পরিষ্কার হয়েছে।

শেষকথা

জিডি করা একটি অত্যন্ত স্বাভাবিক ও সহজ একটি বিষয়। কিন্তু জনমনে জিডি নিয়ে অনেক বিভ্রান্তি থাকার কারণে অনেকেই প্রয়োজন থাকা সত্ত্বেও জিডি করতে চান না। আশা করি এই লেখাটি পড়ার পরে আপনাদের জিডি সম্পর্কে ভীতির অবসান ঘটেছে। মনে রাখবেন, জিডি করার পর হয়তো তা সব সময় ফল প্রদান নাও করতে পারে। কিন্তু যদি কোনো হারানো বস্তু ভাগ্যক্রমে ফিরে পাওয়া যায় কিংবা অন্য কোনো বিষয়ে দীর্ঘ আইনী প্রক্রিয়ায় যেতে হয় তাহলে ঘটনার সাথে সাথে করে রাখা জিডি আপনাকে সুবিধাই দেবে। অপরদিকে জিডি করার কোনো অসুবিধা নেই। থানা পুলিশকে অনেকেই ঝামেলা ও অসুবিধাজনক মনে করে থাকেন। কিন্তু এ মনোভাব পরিহার করা উচিত। কারণ জীবনে কখনো জরুরী প্রয়োজন পড়লে থানারই দ্বারস্থ হতে হবে। তাই অভিজ্ঞতা থাকা ভাল। সর্বোপরি জনগণের সম্পৃক্ততাই পারে পুলিশ ও সাধারণ নাগরিকদের মধ্যকার সম্পর্ককে আরো সহজ করে তুলতে। 

অনবরত জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী

১) জিডি করতে কত সময় লাগতে পারে?

উত্তরঃ এটি নির্ভর করবে সংশ্লিষ্ট থানাতে ভীড় কেমন। সাধারণত সকাল বেলাতে ভীড় কম থাকে। জিডি লিখে জমা দেওয়ার পর তা লিপিবদ্ধ করে আপনাকে প্রতিলিপি দিতে দশ মিনিট সময়ই যথেষ্ট। কিন্তু ভীড় বিবেচনা করে অত্যন্ত ঘন্টা খানেক সময় হাতে নিয়ে যাওয়া উচিত।

২) ১৮ বছরের কম কি কেউ জিডি করতে পারবে?

উত্তরঃ না। জিডি করতে জাতীয় পরিচয় পত্র প্রয়োজন। অপ্রাপ্তবয়ষ্করা জিডি করতে চাইলে তাদের পক্ষে প্রাপ্তবয়ষ্ক অভিভাবক স্থানীয় কাউকে দিয়ে জিডি করাতে হবে।

৩) বাকি থানাগুলোতে কবে অনলাইন জিডির সুবিধা চালু হবে?

উত্তরঃ এ ব্যাপারে কোনো তথ্য জনসম্মুখে প্রকাশ করা হয় নি।

৪) জিডিতে ভুল করলে কি করবো?

উত্তরঃ জিডিতে কাটা ছেড়া করা ঠিক নয়। তাও করতে হলে দায়িত্বরত কর্মকর্তার সাথে পরামর্শ করে করতে পারেন। যদি নতুন ভাবে লেখার প্রয়োজন হয় তাহলে তার পরামর্শ অনুযায়ী তাই করুন।

৫) জিডি থেকে কি মামলা হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে?

উত্তরঃ জিডি ও মামলার এজাহারের মধ্যে মৌলিক পার্থক্য রয়েছে। সাধারণত জিডির আবেদনকারী নিজে না চাইলে জিডি থেকে মামলা হয় না। তবে জিডির প্রেক্ষিতে তদন্ত করতে গিয়ে পুলিশ যদি অত্যন্ত গুরুতর কোনো অপরাধের প্রমাণ পায় তবে পুলিশ নিজেই বাদী হয়ে মামলা করতে পারে।

 

তথ্যসূত্রঃ

১। http://gd.police.gov.bd/index

২। https://www.ittefaq.com.bd/court/223156/জিডি-ও-এফআইআরের-পার্থক্য

৩। https://www.999.gov.bd/content/সাধারণ_ডাইরি_(জিডি)_করবেন_কিভাবে

নবীনতর পূর্বতন