১) প্রস্তুতি গ্রহন করুন এবং পরিকল্পনা সাজান
যেকোন লক্ষ্যে সফল থেকেই প্রয়োজন সঠিক পরিকল্পনা। অনেকেই হুট করে সিগারেট ছেড়ে দেন, তবে তা ৪-৫ দিনের বেশি ধরে রাখতে পারেন না। খুব দৃঢ় মনোবল না থাকলে কারো পক্ষেই এত তীব্র আসক্তি এভাবে ত্যাগ করা সম্ভব হয়না। এছাড়াও হঠাৎ নিকোটিনের অনুপস্থিতি কিছু সাময়িক শারীরিক সমস্যার ও সৃস্টি করে, যার সমাধান করার জন্য দেখা যায় পুনরায় সেই সিগারেটেই ফিরে যান আসক্ত রা। আপনি যদি প্রকৃত অর্থেই এই ভয়ংকর আসক্তিটি থেকে মুক্ত হতে চান, আপনার সুষ্ঠু পরিকল্পনা অনুযায়ী আগানো উচিত। নিজের আসক্তির কারন নিয়ে নিজের কাছে নিজের আগে পরিষ্কার ধারনা থাকতে হবে। তখনই শুধুমাত্র সে ধারনা অনুযায়ী বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহন করে সিগারেটের এই আসক্তি থেকে মুক্তিলাভ করা সম্ভব হবে। তাই আপনি শুরুতেই আগে নিজের সমস্যাটি নিয়ে গভীরভাবে ভেবে কিছু তথ্য বিশ্লেষন করুন। এভাবে নিজেকে নিয়ে নিজে নিশ্চিত হয়ে নিন। যেমনঃ
- আপনার সিগারেট আসক্তির মাত্রা কোন পর্যায়ে আছে তা নিয়ে পরিষ্কার ধারনা থাকতে হবে। যদি আপনি চেইন স্মোকার হন অর্থাৎ দিনে এক প্যাকেটের বেশি সিগারেট প্রয়োজন হয়, সিগারেট ছাড়া থাকতেই পারেন না এরকম ভয়াবহ পর্যায়ের আসক্তিতে আপনাকে অবশ্যই বাকিদের তুলনায় আলাদাভাবে বেশি করে চেষ্টা করতে হবে।
- আপনি সাধারনত যে সময়টাতে সিগারেটের ব্যাপক ইচ্ছা অনুভব করেন যেমন খাবার খাওয়ার পর, বিকাল সময়ে, চা খাওয়ার পর, এরকম যে যে কাজের পর আপনার সিগারেটের ইচ্ছা হয় তার একটি তালিকা তৈরি করুন।
- যেই বিশেষ ব্যক্তির সাথে আপনার সিগারেট বেশি পান করা হয়ে থাকে যেমন কোন বন্ধু, বা বন্ধুদের গ্রুপ, এরকম থাকলে তা চিহ্নিত করুন।
- কোন বিশেষ স্থান যেখানে গিয়ে আপনি নিয়মিত সিগারেট খেয়ে থাকেন যেমন লোকাল কোন দোকান, কিংবা কোন পার্ক। এরকম স্থানের ও তালিকা করুন।
- আপনি অভ্যাসবশতই সিগারেট খেয়ে থাকেন নাকি মানসিক চাপ সামলাতে তা নিশ্চিত হন। নিজের স্ট্রেস কমাতে বা মন ভালো করতে সিগারেট যদি আপনার অন্যতম কারন হয়ে থাকে তাও চিহ্নিত করুন।
উপরের কাজগুলোর মাধ্যমে মূলত আপনি আপনার নিজের সমস্যাগুলো নিজের কাছে আগে পরিষ্কার হলেন এবং এই সমস্যা সৃষ্টিতে কিছু প্রভাব বিস্তারকারী বিষয় সম্পর্কে নিশ্চিত হলেন। যদি সমস্যা কি বা তার কারন ই না জানেন, সেক্ষেত্রে তা সমাধান করা এককথায় অসম্ভব। যেহেতু আপনি চিহ্নিত করেছেন তাই এবার আপনার পক্ষে সমাধান টা সহজ হবে।
এবার আপনার সিগারেট খাওয়ার সমস্যা সমাধানে পরিকল্পনা ও সে অনুযায়ী কাজ শুরু করে দিন৷ যেকোন আসক্তিই চাইলেই ছেড়ে দেওয়া যায়না, এবং ছাড়তে বেশ কস্টই হয়। তাই নিজে মনে মনে দৃঢ় সংকল্প করুন এই বাজে অভ্যাস আপনাকে ছাড়তেই হবে। নিজের পরিবারের কথা ভেবে, নিজের ভবিষ্যৎ জীবনের কথা ভেবে, আপনার উপর যারা নির্ভরশীল তাদের কথা ভেবে হলেও আপনাকে এই ক্ষতিকর অভ্যাসটি ছাড়তেই হবে।। এরপর একটি তারিখ ঠিক করুন, যেদিন থেকে আপনি আর সিগারেট স্পর্শও করবেন না। তবে সেই তারিখ টি অনেক দূরের হওয়া যাবেনা, যতদিনে আপনি মোটিভেশন হারিয়ে ফেলেন। এটি হতে পারে তিনদিন পর বা নতুন সপ্তাহের প্রথম দিন।
সেইদিন থেকে আপনি সিগারেট একদমই খাবেন না। তার আগ অব্ধি যতটুকু সময় রয়েছে ততটুকু সময় সিগারেট খাওয়া কমিয়ে দিন। এমন করবেন না যে ওই তারিখের পর থেকে তো আর খাবোই না, এখন মন ভরে সিগারেট খেয়ে নেই। তাহলে আর সে তারিখ থেকেও আর ছাড়তে পারবেন না। এই সময়টা আপনার প্রস্তুতি পর্যায়, এ সময়ের মধ্যে সিগারেট খাওয়া কমিয়ে দিতে থাকুন ও সেই তারিখ এসে যাওয়ার পর একেবারেই ছেড়ে দিন। ব্যাপারটা কষ্টকর, তবে দৃঢ় মনোবলের সাথে তা শুরু করতে হবে। এছাড়াও আপনাকে জেনে রাখতে হবে সিগারেট খাওয়া ছেড়ে দিলে মাথা ঝিমঝিম করা সহ কি কি সমস্যা সাময়িকভাবে উদয় হতে পারে। সেসবের জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকতে হবে, যাতে এসবের অজুহাতে পুনরায় সিগারেট খাওয়া শুরু না করে দেন। এভাবেই সকল তথ্য জেনে, নিজেকে মানসিকভাবে প্রস্তুত করে, কর্মপন্থা ঠিক করে শুরু করে দিন আপনার এই সিগারেটের বাজে অভ্যাস ত্যাগ করার লড়াই।
আজকে থেকে সিগারেট আর ধরবোই না, শুধুমাত্র এই সংকল্প নিয়ে এই অভ্যাস দূর করতে চাইলে ভালোরকম সম্ভাবনা আছে আপনি আবারো সিগারেটেই ফেরত যাবেন। কারন অনেকগুলো বিষয় আছে যা আপনাকে এই বাজে অভ্যাসটিতে ফিরে যেতে প্ররোচিত করবে। তাছাড়া আপনার মস্তিষ্ক ও সহজে চাইবে না আপনি এতদিনের সিগারেটের অভ্যাস হুট করে বদলে ফেলুন। তাই সিগারেট ছাড়ার এই কাজ টি করতে হবে বুদ্ধিমত্তার সাথে ও সঠিক কর্মপন্থায়। কিছু কাজের মাধ্যমে আপনার জন্য সিগারেট ছাড়া ও আর কখনো এই বাজে অভ্যাসে ফেরত না যাওয়াটা সহজ হয়ে যায়।
২) সবাইকে আপনার সিগারেট ছাড়ার বিষয়টি জানিয়ে দিন
একা একা অভ্যাস ছাড়ার চেয়ে সবাইকে জানালে সেই অভ্যাসটা ছাড়া সহজ হয়ে যায়, কারন তখন সবার সামনে সে কাজ করা যায়না। একটি জবাবদিহিতার মত ব্যাপার চলে আসে। তাই শুরুতেই, সকলকে জানিয়ে দিন, আপনি সিগারেট খাওয়া ছেড়ে দিচ্ছেন। এই বাজে অভ্যাসের দাস হয়ে আপনি আর থাকছেন না। এতে যা হবে, যখনই পরিবারের কারো সামনে, বা অন্য কারো সামনে সিগারেট খেতে যাবেন, তারা মনে করিয়ে দিবে আপনার প্রতিজ্ঞার কথা। তাছাড়া তাদের সামনে প্রতিজ্ঞা করেও তা ভেঙে সিগারেট খেতে আপনার ও খারাপ লাগবে, একটু ইতঃস্তত বোধ করবেন। এই অনুভূতিটাই আপনাকে অনেকক্ষেত্রেই সিগারেট খাওয়া থেকে বিরত রাখবে।
৩) আশপাশ থেকে সিগারেটের সামগ্রী একদম সরিয়ে ফেলুন
আপনার গাড়ি, কামরা, বাড়ি থেকে সকল সিগারেটের প্যাকেট ছুড়ে ফেলে দিন। আপনার হাতের নাগালের মধ্যে যদি এসব থাকে আপনি হয়ত প্ররোচিত হয়ে সিগারেট খেতে পারেন। তাই এসব কিছু আপনার কাছ থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করুন।
৪) আপনার সামনে অন্য কেউ যাতে সিগারেট না খায় তা নিশ্চিত করুন
স্বাভাবিকভাবেই আপনার সামনে অন্য কেউ সিগারেট খেলে এতদিনের পুরানো অভ্যাসের কারনে আপনার ও সিগারেটের তীব্র ইচ্ছা জাগবে। তাই আপনার সামনে কাউকেই সিগারেট খেতে নিষেধ করে রাখবেন। হতে পারে তা বন্ধু বা বাসারই অন্য কেউ। যদি তা সম্ভব না হয়, তবে সে স্থান থেকে সরে আসুন। ধূমপায়ী বন্ধুদের আড্ডার স্থলে কয়েকদিন যাবেন না। যতটা সম্ভব ধূমপানরত কারো থেকে দূরে দূরে থাকার চেষ্টা করুন, যাতে আপনার মনে আবারো সিগারেট খাওয়ার ইচ্ছা জেগে না উঠে।
৫) নিজেকে পুরস্কৃত করুন
যেকোন নতুন অভ্যাস গঠনে এটি বেশ কার্যকর একটি পদ্ধতি। নিজের জন্য নিজেই কয়েকটি “Reward System” রাখুন। একটি উদাহরণ দেওয়া যাক। আপনি নিজে নিজে ঠিক করলেন, যদি আমি আজকে সারাদিন সিগারেট না খেয়ে থাকতে পারি, তাহলে রাতে এই মুভিটা দেখবো। যদি এই সপ্তাহ টা সিগারেট না খেয়ে থাকতে পারি, তাহলে এই নতুন জামাটি কিনবো। এতে যখন আপনি রাতে ফাইনালি মুভিটা দেখবেন, সেটি হবে আপনার সারাদিন ধূমপান থেকে দূরে থাকার পুরস্কার। আমাদের মস্তিষ্ক এ ব্যাপারটি খুব ভালোভাবে গ্রহণ করে। এর ফলে আপনি একটি প্রসেসে পুরষ্কারের জন্য কাজ করছেন, মোটিভেটেড থাকছে ও এতে আপনার অভ্যাসটিই ধীরেও ধীরে পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে।
৬) আপনি যেকারনে সিগারেট ছাড়ছেন তার উত্তর ভালোভাবে মাথায় গেঁথে নিন
এইযে সিগারেট থেকে দূরে আছেন, এর দ্বারা আপনি অর্জন করছেন একটি সুস্থ ভবিষ্যৎ জীবন, আপনার নিজের ও পরিবারের সুরক্ষা ইত্যাদি৷ এর ফলে আপনি সিগারেট ছাড়ার কারন বা মোটিভ নিয়ে নিশ্চিত থাকবেন, ফলে মস্তিষ্ক ও আপনাকে এই অভ্যাসটি ছাড়তে সাহায্য করবে।
৭) “কেবল মাত্র একটি সিগারেট” এর ফাঁদে পা দিবেন না
আপনার খুব বেশি সিগারেট খেতে ইচ্ছা করছে, আপনি আর টিকতে পারছেন না। আপনি ভাবছেন মাত্র একটা সিগারেট ই তো, খেয়ে এই অস্থির অবস্থাটা থামিয়ে আবারো মনোনিবেশ করতে পারবো, সিগারেট ছেড়ে দিতে পারবো, আপাতত এই সমস্যাটার জন্য সিগারেট খাই। এই ফাঁদে কখনোই পা দেওয়া যাবে না। আপনি যখনই এই বাধাটা সরিয়ে দিয়ে একটি সিগারেটের অনুমতি নিজেকে দিয়ে দিবেন, তখন আপনাআপনিই আরো অনেক সিগারেট ও আপনার খাওয়া হয়ে যাবে। মোদ্দাকথা আপনার আর এই ধূমপানের অভ্যাসটি ত্যাগ করা হয়ে উঠবে না। মনে করে দেখুন, সিগারেটের নেশা যখন আপনি শুরু করেছিলেন তখনো কিন্তু ভেবেছিলেন একটা সিগারেট খেলেই আসক্ত হবেন না, খাওয়াই যায়, কিন্তু শেষ অব্ধি কিন্তু আসক্ত হয়েই গিয়েছিলেন।
৮) মোবাইল অ্যাপস ব্যবহার করুন
বর্তমানের যুগের মানুষের স্মার্টফোন ছাড়া চলেই না। আর সেটাতে যদি ধূমপান বিরোধী কোন অ্যাপস থাকে, এটি সিগারেটের নেশা ছাড়াতে বেশ সাহায্য করে। বর্তমানে এমন বেশ কয়েকটি অ্যাপস রয়েছে। জাতীয় ক্যান্সার ইন্সটিটিউট এর ও একটি অ্যাপ রয়েছে। এসব অ্যাপ আপনাকে যেমন মোটিভেটেড করবে, তেমনি আপনি কত তারিখে সিগারেট ছেড়েছেন, কিভাবে কি করছেন তার হিসাব রাখবে, আপনাকে মেসেজ করবে যার ফলে আপনি মোটিভেটেড থাকবেন। এভাবে অ্যাপের মাধ্যমে আপনার লক্ষ্যে স্থির থাকাটা আরো সহজ হয়ে যাবে।
দৃঢ় মনোবলে সিগারেট ছেড়ে দেওয়ার পরেও উপরের কাজগুলোর মাধ্যমে আপনি মূলত আপনার ধূমপানে ফেরত যাওয়ার জন্য পারিপার্শ্বিক যেসব বিষয় প্ররোচিত করতে পারে, এমন বিষয়গুলো বন্ধ করলেন। এভাবে এগুলোর মাধ্যমে আপনি আপনার এই ধূমপান ত্যাগের লক্ষ্যে সফল হতে পারবেন।
সিগারেটের ইচ্ছা জেগে উঠা থামাতে পরামর্শ
এতদিনের অভ্যাস হুট করে ছাড়তে গেলে বারবার সিগারেটের ইচ্ছা জাগবে সেটাই স্বাভাবিক। দৃঢ় মনোবল ও সংকল্পের মাধ্যমে তা মোকাবিলা করতে হবে। এছাড়াও কিছু কাজের মাধ্যমে এই সিগারেটের ইচ্ছা জেগে উঠাটা কমানোর চেস্টা করা যেতে পারে। আপনার জন্য সিগারেটের ইচ্ছা মনে কম আসা মানেই আপনার লক্ষ্যে সফল হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যাওয়া যাওয়া, তাই এ কাজ গুলো করতে হবে।
- নিজেকে নানান কাজে ব্যস্ত রাখুনঃ আপনার যখনই অবসর সময় থাকবে, আপনার মস্তিষ্ক আপনাকে মনে করিয়ে দিবে সিগারেটের ব্যাপারে। তাই নানান কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখুন, যাতে ধূমপানের ব্যাপারটি আপনি ভুলে থাকতে পারেন। ব্যায়াম করুন, গল্পগুজব করুন, পড়াশোনায় ব্যস্ত থাকুন। অর্থাৎ যেভাবেই হোক নিজের ফোকাসটা সরিয়ে নিন, যার ফলে ধূমপানের বিষয়টা মাথাতেই না আসে। আপনি যদি সবসময় ভাবতে থাকেন যে, “আপনি সিগারেট ছেড়ে দিতে কাজ করছি” অর্থাৎ ধূমপান নিয়েই ভাবতে থাকেন একভাবে, তাহলে সফল নাও হতে পারেন। যতভাবে ব্যস্ত থেকে ধূমপানের বিষয়টিকে একেবারেই ভুলে থাকা যায় সেই চেষ্টা করুন।
- অধূমপায়ীদের সাথে চলাফেরা শুরু করুনঃ আপনার অফিসে অধূমপায়ী কলিগদের সাথে লাঞ্চ করুন৷ অধূমপায়ী বন্ধুদের সাথে ঘুরতে যান, গল্প করুন। সবাইকে যেহেতু আগেই জানিয়ে দিয়েছেন সিগারেট ছেড়ে দেওয়ার বিষয়টি, তাই লক্ষ্য অর্জন না করা অব্ধি অধূমপায়ীদের সাথেই বেশি থাকুন৷ এরফলে যেহেতু তারা ধূমপান করছে না, আপনার মনেও ধূমপান করার চিন্তা আসবে না।
- ধূমপানের মত কোন পরিস্থিতি আসলে সরে যানঃ যেই স্থানে আপনি নিয়মিত সিগারেট খেতেন, সেসব জায়গাগুলো থেকে সম্ভব হলে দূরে দূরে থাকুন। যাতে আপনার সিগারেট খাওয়ার কথা মনে না আসে। এছাড়াও, যখনই আপনার খুব সিগারেট খাওয়ার ইচ্ছা হবে, সেই স্থান থেকে বেড়িয়ে যান। যেমন আপনি ছাদে আছেন, হঠাৎ ধূমপানের ইচ্ছা হলে ছাদ থেকে নেমে যান। পরিবেশ বদলানোর ফলে ধূমপানের ইচ্ছাকে মোকাবিলা করা আপনার জন্য সহজ হবে।
- আপনার অন্যান্য যেসব নেশা ধূমপানের সাথে জড়িত তা সবগুলোই বন্ধ করুনঃ যেমন অ্যালকোহল গ্রহন, কিংবা কোন বিশেষ খাবারের পর যদি সিগারেট খাওয়া আপনার অভ্যাস হয় তা পরিত্যাগ করুন। পানশালাতে বা কোন ক্লাব এ যাবেন না, যেখানে সিগারেট বা এসব এর কোন বাধা নেই।
সিগারেটের জন্য তীব্র ইচ্ছা জেগে উঠলে তাৎক্ষণিক যা করবেন
উপরের বিষয়গুলো ছিলো সিগারেটের ইচ্ছা আপনার মনে যত কম আনা যায় সে ব্যবস্থা করার জন্য নেওয়া পদক্ষেপ। কিন্তু যদি পরিস্থিতি এমন হয় যে, আপনার মনে তীব্র ইচ্ছা হচ্ছে ধূমপানের, কিছুতেই নিজেকে নিয়ন্ত্রন করতে পারছেন না। এমন পরিস্থিতিতে কখনোই হেরে গিয়ে সিগারেট খাওয়া যাবেনা। এই তীব্র ইচ্ছা দমানোর জন্য নিচের কাজগুলো করতে পারেন।
১) জোর করে অপেক্ষা করুন, মস্তিষ্ককে বোকা বানান
সাধারনত আপনার এই নিকোটিন গ্রহনের এই তীব্র ইচ্ছা ৫-৬ মিনিটের বেশি থাকবে না, এরপর সহনীয় হয়ে যাবে৷ এখন এই সময়টা অপেক্ষা করাটাই অনেক বেশি কষ্টকর। এক্ষেত্রে আপনাকে মানসিকভাবে দৃঢ় হতে হবে আর নিজেকে বুঝাতে হবে, যদিও আমার এখন ইচ্ছা করছে, আমি কোনভাবেই দশ মিনিটের আগে সিগারেট স্পর্শ করবো ন৷ এতে যা হবে, ব্রেন বুঝবে দশ মিনিট পরে পাচ্ছেন ই, তাই অপেক্ষা করাটা তুলনামূলক সহজ হয়ে যাবে৷ আবার দশ মিনিট পার হয়ে গেলে ইচ্ছাটা এতটাও তীব্র থাকবেনা,ফলে আপনি সহজেই তা আগ্রাহ্য করে নিজেকে সিগারেট থেকে বিরত রাখতে পারবেন।
২) কিছু মুখে নিন
যখন ধূমপানের ইচ্ছা খুব বেশি তীব্র হবে, মুখে সিগারেটের বদলে অন্য কিছু নিন৷ তা হতে পারে গাম, চকলেট, গাজর কিংবা অন্যকিছু। অন্য কিছু মুখে নিয়ে চাঁবাতে থাকলে সিগারেট খাওয়ার ইচ্ছা অনেকটাই কমে যাবে।
৩) নিজের হাত ব্যস্ত রাখুন
হাতের কাছে কোন বল থাকলে খেলতে থাকুন। পেন্সিল পেলে লিখা শুরু করুন, অন্য কিছু থাকলে হাওয়ায় ছুড়ে ক্যাচ ধরুন। সোজাকথায় নিজের হাতকে ব্যস্ত রাখুন। এর সাথে আপনার ফোকাস ও অনেকাংশে সিগারেট থেকে সরে যাবে। এভাবে সিগারেটের উদ্দীপনা কমানো সম্ভব।
৪) দাঁত ব্রাশ করুন
যখনই সিগারেট খাওয়ার খুব ইচ্ছা হবে, সম্ভব হলে দ্রাত ব্রাশ করে ফেলুন। পরিষ্কার নিঃশ্বাস ও সুন্দর ঝকঝকে দাঁতের কারনে আপনার সিগারেট খাওয়ার ইচ্ছা কমে যাবে৷ কারন মুখে টুথপেস্টের স্মেল থাকবে।
৫) পানি পান করুন
তীব্র সিগারেট খাওয়ার ইচ্ছা করলে সময় ভালো পরিমানে পানি পান করুন। তবে দ্রুত শেষ করবেন না,আস্তে আস্তে ঢোক গিলবেন। এতে শুধুমাত্র আপনার সিগারেট খাওয়ার ওই মূহুর্তের ইচ্ছাটা নষ্ট হবে তাইই নয়, হুট করে নিকোটিনের অভাবে আপনার শরীরে যে প্রতিক্রিয়া হচ্ছিলো তাও অনেক কমে যাবে।
৬) অন্য কিছু জ্বালান
সিগারেট জ্বালানোর বদলে অন্যকিছু জ্বালান। যেমন মোমবাতি কিংবা অন্য কিছুতে আগুন দিয়ে কিছু করুন। অদ্ভুত শুনালেও এটি মনকে সরিয়ে নিয়ে সিগারেট খাওয়ার ইচ্ছাকে দমিয়ে দেয়।
৭) বক্স ব্রিদিং
এটি নার্ভকে শান্ত করতে একটি বহুল প্রচলিত উপায়, এমনকি সামরিক বাহিনীতেও এটিকে ব্যবহার করা হয়৷ যখনই এমন তীব্র ইচ্ছা হবে, ৪ সেকেন্ড ধরে নিঃশ্বাস নিন, ৪ সেকেন্ড ধরে রাখুন এবং ৪ সেকেন্ড ধরে প্রশ্বাস ত্যাগ করুন। এরকম মোট ৪ বার বা আরো বেশি করতে হবে। এটিকেই বলে বক্স ব্রিদিং৷ এর ফলে আপনার মন শান্ত হবে, রিল্যাক্সড হবেন এবং ধূমপানের তীব্র উদ্দীপনাটা আর থাকবে না।
৮) এক্সারসাইজ করুন
এরকম তীব্র ইচ্ছা যখনই হবে, দ্রুত কোন ব্যায়াম শুরু করে দিতে পারেন। এটি হতে পারে পুশ আপ, সিট আপ না অন্য যেকোন কিছু। এতে পরিশ্রমে শরীরে অক্সিজেনের চাহিদা বেড়ে যাবে, মস্তিষ্ক উদ্দীপ্ত হবে এবং ধূমপানের ইচ্ছাটা আর থাকবে না বা মোকাবিলা করা সহজ হয়ে যাবে।
সিগারেট ছাড়ার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ও প্রতিকার
যেমনটা শুরুতেই বলেছিলাম, সিগারেট একটি শারীরিক ও মানসিক উভয় ধরনের বাজে আসক্তি। এই আসক্তি থেকে মুক্ত হয়ে চাইলে এর প্রতিক্রিয়া শারীরিক ও মানসিক উভয় ভাবেই হয়। হুট করে দেহে নিকোটিন না নেওয়ায় এর অভাবে কিছু সাময়িক শারীরিক অসুবিধা দেখা যায়৷ এগুলো সম্পর্কে আগেই জেনে রেখে প্রস্তুত থাকতে হবে, যাতে এগুলোর কারনে হাল ছেড়ে দিয়ে ধূমপানে ফেরত না যেতে হয়। এগুলো সাময়িক প্রতিক্রিয়া, কিছুদিনেই সাধারণত নিয়ন্ত্রনে আসে। তবে যদি নিয়ন্ত্রনে না আসে, অবশ্যই শুধু ধূমপান ছাড়ার প্রতিক্রিয়া ভেবে বসে থাকবেন না, একজন ভালো ডাক্তারের শরণাপন্ন হবেন এবং যথাযথ মেডিকেল চিকিৎসা গ্রহণ করবেন। নিকোটিন গ্রহন হঠাৎ ছেড়ে দেওয়ার ফলে আপনার শরীরে যেসব শারীরিক প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারেঃ
- খুব অস্বস্তি অনুভব হবে। সহজে রাগ হওয়া বা মেজাজ খিটখিটে হয়ে যেতে পারে।
- কোন কিছুতে একটানা বেশিক্ষন মনোযোগ দিতে সমস্যা দেখা দিতে পারে।
- দুশ্চিন্তা বা মানসিক অস্থিরতা বৃদ্ধি পাবে। এটির কারন একদিকে যেমন হঠাৎ নিকোটিন শূন্যতা, অন্যদিকে এতদিনের অভ্যাস এর হঠাৎ বদল। আপনাকে বুঝতে হবে যে একটি বড় লাভের জন্য আপনাকে এই ছোট সমস্যাগুলোর মুখোমুখি হতে হচ্ছে, সেভাবেই মনকে বুঝিয়ে সিগারেট ছাড়ার সংকল্পে অটুট থাকতে হবে।
- ক্ষুধা বৃদ্ধি পাবে। ফলে ঘন ঘন খাবার খেতে ইচ্ছা হবে এবং সবসময় ক্ষুধার্ত অনুভব হবে।
- মাথাব্যাথা হতে পারে। সিগারেট থেকে দূরে থাকলে গেলে একটি ধূমপায়ীদের হওয়া একটি সাধারন সমস্যা।
- ঘুম কম হবে, অনেকটা অনিদ্রা রোগীদের মত। কয়েকদিন কষ্ট করে মানিয়ে নিয়ে হবে।
- শরীরে কাঁপুনি দিতে পারে। যদি এ সমস্যা খুব বেশিই হয়, সেক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শে কোন ঔষধ সেবনে উপকার হবে।
- কাশি বৃদ্ধি পাবে। এটিও বেশিরভাগ সময়েই সাধারন সমস্যাগুলোর একটি।
- পেট খারাপ বা কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। এটি বেশি করে স্বাস্থ্যকর সবজি খেলেই সেরে যায়, কারন সবজিতে “রাফেজ” নামক অপাচ্য অংশ কোষ্ঠকাঠিন্য হতে দেয়না।
- ক্লান্তি বা অবসাদগ্রস্থ অনুভব হতে পারে। দীর্ঘদিনের অভ্যাস পরিবর্তন এর ক্ষেত্রে নিকোটিনের অভাবে এটি হওয়া স্বাভাবিক।
- সাময়িক ডিপ্রেশন হতে পারে। এটি কমই ঘটে তবে এর সম্ভাবনা আছে। পরিবারের সদস্যরা সহ বাকিরা সহযোগিতাপূর্ণ মনোভাবের হলে এই সমস্যা কাটিয়ে উঠা যায় দ্রুতই।
- হৃদস্পন্দনের হার কমে যেতে পারে৷ নিকোটিনের প্রবেশ শরীরে বন্ধ হয়ে যাওয়ার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে এটি ঘটে থাকে।
মনে রাখতে হবে, আপনি খুবই বাজে একটি অভ্যাস কে পরিত্যাগ করছেন। যদি এই অভ্যাসটি বজায় রাখেন, তাহলে আপনার ফুসফুসের ক্যান্সার সহ আরো জটিল ও ভয়াবহ রোগ হতে পারে, যার তুলনায় এই সাময়িক প্রতিক্রিয়া কিছুই না। এগুলো সবই সাময়িক,কিছুদিনের মধ্যেই সেরে যায়। তাই এসবে ভয় পেয়ে ভুলেও সিগারেটে ফেরত যাওয়া যাবেনা। আপনার যদি খারাপ লাগে এ সময়ে, আপনি সিগারেট খাওয়ার ফলে শোচনীয় অবস্থার রোগীদের ভিডিও দেখতে পারেন নিজেকে বুঝ দেওয়ার জন্য। পাশাপাশি, নিজেকে এসব সমস্যার জন্য আগে থেকেই প্রস্তুত রাখবেন। এছাড়াও, আপনার পরিবারের সদস্য, বন্ধুবান্ধব, অফিস কলিগ সহ সবাইকে বলে রাখবেন যে আপনি সিগারেট ত্যাগ করছেন, কয়েকটা দিন আপনার আচরণ একটু ভিন্ন থাকতে পারে, তারা যেন আপনাকে সহযোগিতা করে। আপনার নিজের মনোবল দৃঢ় হলে এসব সাময়িক সমস্যা আপনি কাটিয়ে উঠতে পারবেন এবং সিগারেট সম্পূর্ণরূপে ছাড়তে পারবেন।
সিগারেট ছাড়ার বিভিন্ন থেরাপি
সিগারেট ছাড়ার জন্য আপনি নিজে থেকে ত্যাগ করে নিজেকে সামলে নিতে যেমন পারেন, তেমনি যাদের এই আসক্তি খুবই তীব্র তারা বিভিন্ন থেরাপীর মাধ্যমেও মুক্ত হতে পারেন। আপনার জন্য কোন থেরাপিটি উপযুক্ত হবে সেটি আপনি বিশেষজ্ঞ থেরাপিস্ট বা ডাক্তার এর শরণাপন্ন হয়ে তাদের পরামর্শ অনুযায়ী করবেন। কিছু থেরাপি যা সিগারেট ছাড়ার জন্য সাধারনত ব্যবহৃত হয় এমন হলোঃ
- নিকোটিন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপিঃ এই থেরাপিতে সিগারেটের নিকোটিনেরর বদলে আপনার শরীরে অন্যান্য উপায়ে নিকোটিনের প্রবেশ করানো হয়। যেমন গাম, লজেন্স, ন্যাসাল স্প্রে এসব আকারে দেহে নিকোটিন প্রবেশ করলে সিগারেট খাওয়ার খুব একটা ইচ্ছা জাগে না, ফলে মানসিকভাবে অভ্যাস টা ত্যাগ করা সহজ হয়। এতে কোন বিষাক্ত গ্যাস ও থাকেনা যেমনটা হয়ে থাকে সিগারেটের ধোঁয়ায়। ফলে শারীরিক প্রতিক্রিয়া কম করে মানসিকভাবে এই অভ্যাসটা পরিবর্তন করে সহজে এই আসক্তি থেকে মুক্তিলাভ করা যায়।
- হিপনোসিসঃ অনেক ধূমপায়ী যারা কিছুতেই সিগারেট থেকে বিরত থাকতে পারছিলেন না তারা হিপনোসিসের মাধ্যমে এর থেকে মুক্ত হতে পেরেছেন। সিনেমা বা নাটকে হিপনোসিস এর হাস্যকর পদ্ধতি আপনি যা দেখেছেন এটি সেরকম কিছু না। এই থেরাপিতে মূলত আপনাকে মানসিকভাবে শক্তিশালী করা হয়, ধূমপানের প্রতি আপনার সচেতন ও অবচেতন উভয় মনেই প্রচন্ড বিরক্তি ও ঘৃনা তৈরি করে দেওয়া হয়, ফলে আপনি আর সিগারেটে ফেরত যাওয়ার কোন আগ্রহ পান না এবং সহজেই এই বাজে আসক্তিটি থেকে মুক্তিলাভ করতে পারেন।
- Acupuncture: এটি বেশ পুরাতন যুগের একটি থেরাপি। দেহে বিভিন্ন চিকন সুই গাঁথা হয়ে থাকে এই থেরাপিতে, এবং একটি প্রক্রিয়ায় আপনার শরীরে এন্ড্রোফিন ( প্রাকৃতিক ব্যাথানাশক ) নিঃসরণের মাধ্যমে আপনাকে সিগারেট ছাড়ার কারনে যেসব অসুবিধায় ভুগছিলেন তা থেকে মুক্তি দিতে পারে৷ ফলে সিগারেট আসক্তি ছাড়া আপনার জন্য সহজতর হয়ে উঠে। তবে এই থেরাপিটিকে মেডিকেল সাইন্স অতটা সমর্থন করে না, কারন কিছু ঝুঁকি এতে থেকে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। তাই এই থেরাপি গ্রহনের আগে থেরাপিস্ট ও ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে সম্পূর্ণরূপে নিশ্চিত হয়ে নিবেন।
- মোটিভেশনাল থেরাপিঃ এ থেরাপিতে আপনাকে নানানভাবে সিগারেট ত্যাগের জন্য অনুপ্রেরিত করা হয়ে থাকে। ফলে আপনি সিগারেট ত্যাগ করতে আগ্রহী হন, আবার অনুপ্রেরণার কারনে সিগারেট ছাড়তে যাসব বাধাবিপত্তি আসে তাও মনের জোরে মোকাবিলা করতে সক্ষম হন। এটি নানানভাবে কাজ করতে পারে। যেমন অনেকে পরিবারের সদস্যদের ধূমপানের ফলে হওয়া ক্ষতি হওয়া থেকে বাঁচাতে সিগারেট ছাড়তে মোটিভেটেড হয়, কাউকে বা বুঝানো হয় সে সিগারেট না খেলে খরচ বাঁচিয়ে কি কি করতে পারে, যা তাকে সিগারেট ছাড়া ও পরবর্তী প্রতিক্রিয়া সামলাতে মানসিকভাবে দৃঢ় করে তোলে।
- বিহেভিয়ারেল থেরাপিঃ এ থেরাপি অনুযায়ী আপনাকে আপনার আচরণের উপর নিজের নিয়ন্ত্রন প্রতিষ্ঠা ও সিগারেট ত্যাগী মনোভাব তৈরি করার চেষ্টা করা হয়ে থাকে। আপনি যখন নিজের মনোভাব ও আচরণের উপর সম্পূর্ণ কতৃর্ত্ব প্রতিষ্ঠা করতে পারেন তখন আর সিগারেট ছাড়ার পর আপনার আর সিগারেট খাওয়ার তেমন ইচ্ছা জাগে, বা ধূমপানের ইচ্ছা হলেও আপনি সহজেই নিজেকে নিয়ন্ত্রন করতে পারেন। এভাবে আপনি নিজের আচরণের ও আবেগের নিয়ন্ত্রনের মাধ্যমে সিগারেট থেকে দূরে সরে যেতে সক্ষম হবেন। এর ফলে, আপনার সামনে কেউ সিগারেট খেলেও যেহেতু আপনার নিজের আচরণ ও আবেগের উপর আপনার নিয়ন্ত্রণ রয়েছে,তাই আপনি লোভে পড়বেন না এবং সিগারেট খাবেন না। এভাবেই এই থেরাপিটি কাজ করে থাকে।
এছাড়াও ধূমপায়ী ব্যক্তিরা তাদের সিগারেট ছাড়ার জন্য নানান প্রকারের থেরাপি গ্রহণ করে থাকে। পাশাপাশি আপনি কোন ডাক্তারের কাছে শরণাপন্ন হয়ে ঔষধ সেবন ও অন্যান্য চিকিৎসার মাধ্যমেও সিগারেটের প্রতিকারে সহায়তা লাভ পেতে পারেন। সেক্ষেত্রে ডাক্তার আপনাকে যেভাবে চিকিৎসা সে অনুযায়ীই আপনি তা মেনে চললে এই সিগারেটের আসক্তি থেকে মুক্তি লাভ করতে পারবেন।