অনলাইনে ট্রেনের টিকেট কাটার সময় সকাল ৬ টা থেকে রাত ১১ টা। ২০২১ সালের ৯ই মার্চ ‘বাংলাদেশ রেলওয়ে’ এর পরিপত্র অনুযায়ী একজন যাত্রী সর্বোচ্চ ৫দিন আগে ই-সেবা ওয়েবসাইটে ট্রেনের অগ্রিম টিকেট কাটতে পারবেন। এর আগে এই সময় ছিল ১০ দিন। কিন্তু তা কমিয়ে ৫ দিন করার সিধান্ত নেওয়া হয়েছে। ২০২১ সালে ৫ই এপ্রিল থেকে এই নিয়ম কার্যকর হয়েছে।
একই সাথে ট্রেনের টিকেট ফেরত দেওয়ার নিয়মেও কিছু পরিবর্তন আসবে। ট্রেন ছাড়ার ৪৮ ঘন্টার আগে টিকেট ফেরত দিতে চাইলে সার্ভিস চার্জ কেটে বাকি টাকা ফেরত দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে এসি টিকেটে ৪০ টাকা, ১ম শ্রেণিতে ৩০ টাকা ও অন্যান্য টিকিটে ২৫ টাকা চার্জ কাটা হবে।
এছাড়া আরো কিছু শর্ত প্রযোজ্য হবে যা নিম্নরূপঃ
১) ট্রেন ছাড়ার পূর্বে ৪৮ ঘন্টার কম সময় বাকি থাকা সাপেক্ষে টিকেট মূল্যের ২৫ শতাংশ কেটে রাখা হবে।
২) ২৪ ঘন্টার কম সময় কিন্তু ১২ ঘন্টার বেশি সময় বাকি থাকা সাপেক্ষে টিকেট মূল্যের ৫০ শতাংশ কেটে রাখা হবে।
৩) ১২ ঘন্টার কম সময় কিন্তু ০৬ ঘন্টার বেশি সময় বাকি থাকা সাপেক্ষে টিকেট মূল্যের ৭৫ শতাংশ কেটে রাখা হবে।
৪) ৬ ঘন্টার কম সময় বাকি থাকলে টিকেট ফেরত নেওয়া হবে না।
তথ্যসূত্রঃ সময় নিউজ
বাংলাদেশ রেলওয়ের ই-সেবা ওয়েবসাইট থেকে ট্রেনের টিকেট কাটার নিয়ম
যেহেতু ওয়েবসাইটের সাহায্যে কম্পিউটার মোবাইল দুই জায়গা থেকেই ট্রেনের টিকেট কাটা যায়। এখানে প্রথমে ওয়েবসাইটের প্রক্রিয়াটিই বর্ণনা করা যাক। চলুন ধাপে ধাপে জেনে নিই কিভাবে ই-টিকেট ওয়েবসাইটের সাহায্যে টিকেট কাটা যায়।
ধাপ ১ঃ নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটে যাওয়া
অনলাইনে ট্রেনের টিকেট কাটার প্রথম ধাপটি হলো টিকেট কাটার জন্য নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটে প্রবেশ করা। উল্লেখ্য যে, বাংলাদেশ রেলওয়ের মূলত দু’টি সাইট রয়েছে। তার মধ্যে একটি রেল মন্ত্রণালয়ের সাইট। এই সাইটে গেলে আপনি রেল মন্ত্রণালয়ের ভিশন ও কার্যক্রম সম্পর্কে জানতে পারবেন ও অন্যান্য সরকারি কাজ দেখতে পারবেন। তবে ট্রেনের টিকেট করার জন্য আপনাকে যেতে হবে বাংলাদেশ রেলওয়ে এর ই-টিকিটিং পরিষেবা ওয়েবসাইটে।
ধাপ ২ঃ অ্যাকাউন্ট (Account) খোলা
এবারে আপনাকে আপনার পরিচয় নিশ্চিত করতে হবে। আর সেজন্যই প্রয়োজন একটি অ্যাকাউন্ট। অ্যাকাউন্ট খুলতে যা যা লাগবেঃ
১) নাম
২) ইমেইল এড্রেস (Email Address)
৩) মোবাইল নাম্বার
৪) জাতীয় পরিচয়পত্র অথবা জন্ম সনদ
অ্যাকাউন্ট খুলতে প্রথমেই চলে যেতে হবে ওয়েবসাইটে। সাইটে প্রবেশ করার পর নিচের চিত্র ‘১’ এর ‘১’ দ্বারা চিহ্নিত ‘Register’ নামক অংশে ক্লিক করতে হবে।
Register বাটনে ক্লিক করার পর পরই ‘User Registration’ নামক একটি পেজে আপনাকে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে নিচের চিত্র ‘২’ এর মতো বেশ কিছু ফাঁকা ঘর দেখতে পাবেন। ঘরগুলোতে যেসব তথ্য চাওয়া হয়েছে তা নির্ভুলভাবে পূরণ করতে হবে।
সকল তথ্য সঠিকভাবে পূরণ করে চিত্র ‘২’ এর ‘১’ দ্বারা চিহ্নিত ‘Sign Up’ বাটনে চাপ দিলেই আপনার মোবাইল নাম্বারে একটি ‘পিন কোড’ আসবে। এই পিনটি সাথে সাথেই প্রবেশ করিয়ে নিচের চিত্র ‘৩’ এর ‘১’ দ্বারা চিহ্নিত ‘Verify’ বাটনে ক্লিক করলেই আপনার অ্যাকাউন্ট প্রাথমিকভাবে চালু হয়ে যাবে।
ভেরিফাই করার পর আপনাকে ‘Login’ পেজে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে নিজের ইমেইল বা মোবাইল নাম্বার এবং পাসওয়ার্ডটি দিয়ে লগ ইন করুন।
ধাপ ৩ঃ অ্যাকাউন্টের তথ্যাবলী পূর্ণ করা
অ্যাকাউন্ট রেজিস্ট্রেশন হয়ে গেলে লগ ইন করার সাথে সাথে আপনি চলে যাবেন অ্যাকাউন্টের ড্যাশবোর্ড (Dashboard) এ। সেখানে ‘Update User Profile’ নামক সেকশনেই যাত্রা শুরু হবে আপনার অ্যাকাউন্টের। অ্যাকাউন্ট খোলার সময় প্রাথমিকভাবে কিছু তথ্য দিলেও এবার পালা সকল তথ্য প্রদানের। এই সেকশনে আপনি নিচের চিত্র ‘৫’ এর মতো অনেকগুলো বক্স দেখতে পারবেন যা সঠিক তথ্য দ্বারা পূরণ করতে হবে। এখানে ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে ছোট একটি টিপস দেই। জাতীয় পরিচয়পত্রতে নাম্বার আলাদা আলাদা করে মোট ৩ ভাগে লেখা থেকে। ওয়েবসাইটে লেখার সময় সবকটি নাম্বার একসাথে লিখবেন। কোন ফাঁকা জায়গা রাখবেন না। ফাঁকা জায়গা রাখলে তা গ্রহণযোগ্য হবে না।
জন্ম নিবন্ধন সনদ বা জাতীয় পরিচয় পত্রের নাম্বার প্রবেশ করাতে উপরের চিত্র ৫ এর ‘১’ দ্বারা চিহ্নিত ‘Identification Number’ এর নিচে অবস্থিত ড্রপডাউন মেনু-তে চাপ দিন। সেখান থেকে আপনি আইডেন্টিফিকেশন নাম্বার হিসেবে জাতীয় পরিচয়পত্রের নাম্বার দেবেন অথবা জন্ম নিবন্ধন সনদের নাম্বার দিতে পারেন। এরপর পাশের বক্সটিতে তা লিখুন। উল্লেখ্য যে, ১২ বছর বয়স হলেই রেলের টিকিট কাটা যায়। ১২ বছরের উপরের ব্যক্তি জন্ম সনদ ব্যবহার করে টিকিট কাটতে পারবেন। ১৮ বছরের অধিক হলে তাকে জাতীয় পরিচয় পত্র ব্যবহার করতে হবে। তবে তার জন্য জাতীয় পরিচয়পত্র হাতে থাকার দরকার নেই। পরিচয়পত্রের অনলাইন কপি থেকে শুধু নাম্বারটি প্রবেশ করালেই চলবে।
সবকিছু সঠিকভাবে পূরণ শেষে চিত্র ‘৫’ এর ‘২’ দ্বারা চিহ্নিত ‘Update your profile’ বাটনে চাপ দিলেই প্রোফাইল আপডেটেড হয়ে যাবে।
ধাপ ০৪ঃ অ্যাকাউন্টের তথ্যাবলী পরিবর্তন করা
যদি আপনি কোন ভুল তথ্য দিয়ে থাকেন তাহলে তা সংশোধনের সুযোগ আছে। সে ক্ষেত্রে একইভাবে আপনাকে চিত্র ‘৫’ এর মতো ‘Dashboard’ এ যেতে হবে। ড্যাশবোর্ডের ‘Update User Profile’ এ গিয়ে সাধারণ তথ্যাবলীগুলো পরিবর্তন করা যাবে। আবার চাইলে নিচের চিত্র ‘৬’ এ যথাক্রমে ‘১’, ‘২’, ‘৩’ দ্বারা চিহ্নিত অংশে ক্লিক করে আপনার অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ড কিংবা আপনার অ্যাকাউন্টের সাথে সংযুক্ত মোবাইল অথবা ইমেইল এড্রেসটি পরিবর্তন করতে পারবেন।
ধাপ ০৫ঃ যাত্রা সম্পর্কে যাবতীয় তথ্যাবলী প্রদান
পূর্বের ধাপগুলো মেনে আপনার অ্যাকাউন্টের সকল তথ্যগুলো পূরণ করলে ইতোমধ্যে আপনার অ্যাকাউন্ট টিকিট কাটার জন্য প্রস্তুত হয়ে গেছে। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক কিভাবে কাটবেন আপনার কাঙ্ক্ষিত ট্রেনের টিকেট। যেহেতু আপনি ইতোমধ্যে অ্যাকাউন্ট লগড ইন আছেন তাই আপনাকে ড্যাশবোর্ড থেকে ‘১’ দ্বারা চিহ্নিত ‘Home’ বাটনে ক্লিক করে হোম (Home) এ চলে যেতে হবে।
হোমপেজে নিচের চিত্র ‘৮’ এর মতো একটি দৃশ্য দেখতে পাবেন। এতে পরিষ্কারভাবে টিকেট কাটার ইন্টারফেসটি দেখা যাচ্ছে। টিকিট কাটতে প্রথমেই আপনাকে কোথা থেকে যাত্রা শুরু করবেন এবং কোথায় যাবেন তা নির্ধারণ করতে হবে। সেটি করতে চিত্র ‘৮’ এর ‘১’ দ্বারা চিহ্নিত ‘From’ এ ক্লিক করে নিজের যাত্রা শুরুর স্থান নির্ধারণ করে দিন। অনেকগুলো অপশনের মাঝে নাম খুঁজে না পেলে ইংরেজি অক্ষরে টাইপ করুন, পেয়ে যাবেন। এক্ষেত্রে আমি ‘Dhaka’ কে আমার যাত্রা শুরুর স্থান হিসেবে নির্ধারণ করেছি। ঠিক একই প্রক্রিয়ায় গন্তব্য নির্ধারণ করেছি ‘Khulna’। ‘২’ দ্বারা চিহ্নিত ‘To’ তে চাপ দিয়ে আপনি আপনার গন্তব্য নির্ধারণ করুন।
এবার যাত্রার দিন নির্ধারণের পালা। চিত্র ‘৮’ এর ‘৩’ দ্বারা চিহ্নিত ‘Date’ অপশন হতে আপনার যাত্রার দিন নির্ধারণ করুন। দিন নির্ধারিত হলে আপনাকে নির্ধারণ করতে হবে যে আপনি ট্রেনের কোন শ্রেণীতে ভ্রমণ করতে চান। অর্থাৎ কতটা সুযোগ-সুবিধা নিয়ে আপনি ভ্রমণ করবেন। ট্রেনে মোট ৪ ধরনের শ্রেণী রয়েছে। মনে রাখবেন সুবিধা যত বেশি, ভাড়াও তত বেশি।
মানের অধঃক্রম অনুযায়ী সেগুলো হলোঃ
১) AC_B
২) AC_S
৩) SNIGDHA
৪) S_CHAIR
আমি এক্ষেত্রে সবচেয়ে সাধারণ সিট অর্থাৎ ‘S_CHAIR’ নির্ধারণ করেছি। অতঃপর চিত্রের ‘৪’ দ্বারা চিহ্নিত ‘Passenger(s)’ অপশনে থেকে কয়জন একত্রে যাত্রা করবেন তা ঠিক করে নিন। উল্লেখ্য যে, বড় মানুষদের জন্য ‘Adult’ অপশনে এবং বাচ্চাদের জন্য ‘Child’ অপশনে চাপ দিতে হবে। মনে রাখবেন, একটি অ্যাকাউন্ট থেকে একত্রে আপনি শুধুমাত্র ৪ জনের জন্যই টিকিট কাটতে পারবেন। এর থেকে বেশি লোক একসাথে ভ্রমণ করতে গেলে অন্য কোন অ্যাকাউন্ট থেকে বাকি টিকিট কাটতে হবে। এবারে চিত্র ‘৮’ এর ‘৫’ দ্বারা চিহ্নিত ‘Find’ অপশনে ক্লিক করলেই পরবর্তী ধাপে চলে যাবেন।
ধাপ ০৬ঃ ট্রেন নির্ধারণ করা
যাত্রা সম্পর্কে তথ্যাবলী তো দেওয়া হলো। কিন্তু এবার আপনাকে নির্ধারণ করতে হবে কোন ট্রেনে ভ্রমণ করবেন সেটি। ‘Find’ এ চাপ দেওয়ার পর, আপনার যাত্রা স্থল থেকে গন্তব্যের দিকে ওই দিনে যত ট্রেন যাবে তার সবকটিকে আপনার সামনে তুলে ধরা হবে। যেমন আমার ক্ষেত্রে নিচের চিত্র ‘৯’ এ দু’টি ট্রেন দেখতে পাচ্ছেন।
উপরের ৯ নং চিত্রটি দেখলেই আপনারা বুঝতে পারবেন যে এতে ওইদিনে চলাচলকারী সকল ট্রেনের নাম, ছাড়ার সময়, পৌঁছানোর সময়, যেতে কতক্ষণ লাগবে ও ভাড়া কত তা স্পষ্টভাবে দেওয়া আছে। তবে আরো বিস্তারিত জানতে চিত্র ‘৯’ এর ‘১’ দ্বারা চিহ্নিত ‘Details’ এ ক্লিক করুন।
এক্ষেত্রে আমি চিত্রা ট্রেনটিকে নির্ধারণ করছি। ‘Details’ এ চাপ দেওয়ার পর পরই নিচের চিত্র ‘১০’ এর মতো আরেকটি উইন্ডো দেখতে পাবেন। এখানে ট্রেনটি কখন ঢাকা থেকে ছাড়বে এবং ঠিক কটার সময় এটি কোন স্টেশন অতিক্রম করার কথা তা খুবই স্পষ্টভাবে দেওয়া আছে। চাইলেই আপনি পুরো যাত্রাপথটিকে খুঁটিয়ে দেখতে পারেন। এর মাধ্যমে আপনি যদি নির্ধারিত গন্তব্যের আগেই কোন স্টেশনে নেমে যেতে চান তাহলে কখন সেখানে পৌঁছাবেন তাও জানতে পারবেন। টিকিট কিনতে এবার চিত্র ‘১০’ এর ‘১’ দ্বারা চিহ্নিত ‘Purchase’ বাটনে চাপ দিন।
ধাপ ০৭ঃ আসন নির্ধারণ করা
‘Purchase’ এ চাপ দেওয়ার পর পরই নিচের চিত্র ‘১১’ এর মতো একটি পেইজ খুলে যাবে। এখানে আপনার ও আপনার টিকেটের যাবতীয় তথ্য দেখাবে। সেখান থেকে আপনি নিজের জন্য ট্রেনের নির্দিষ্ট আসন নির্ধারণ করতে পারবেন।
চিত্র ‘১১’ এর ‘১’ দ্বারা চিহ্নিত ‘Buy Ticket’ বাটনে চাপ দিলেই আপনার জন্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে একটি আসন নির্ধারিত হয়ে যাবে এবং আপনি সরাসরি ভাড়া পরিশোধের পেজে চলে যাবেন। তবে আমি এটা কোনভাবেই করতে বলবো না। কারণ সেক্ষেত্রে আপনি বগির কোথায় সীট পাবেন তার নিশ্চয়তা নেই। অনেকেই জানালার পাশের সিটগুলো বেশি পছন্দ করেন। আর নিজের পছন্দ অনুযায়ী সিট পেতে চিত্রের ‘২’ দ্বারা চিহ্নিত ‘Manual’ অংশে চাপ দিন। অতঃপর নিচের চিত্র ‘১২’ এর মতো একটি পেজ দেখতে পাবেন।
এই পেজটিতে আপনি ট্রেনের বগির গঠন দেখতে পাচ্ছেন। আর এই ভার্চুয়াল বগির যেকোন একটি আসনে চাপ দিয়ে তা আপনি নিজের জন্য নির্ধারণ করতে পারেন। চাইলে আপনি বগি পরিবর্তনও করতে পারেন। এক্ষেত্রে চিত্র ‘১২’ এর ‘১’ দ্বারা চিহ্নিত স্থানে চাপ দিলেই ভিন্ন ভিন্ন বগির নাম দেখতে পাবেন ও নির্ধারণ করতে পারবেন।
বগি নির্ধারণের পরে এবার আসন নির্ধারণের পালা। তবে যেসব আসন লাল রং দেখাচ্ছে তা ইতোমধ্যে অন্যের জন্য নির্ধারিত। তাই সবুজ রং করা একটি আসন বেছে নিয়ে তাতে চাপ দিলেই সেটি কালো রং ধারণ করবে এবং তা প্রাথমিকভাবে আপনার জন্য নির্ধারিত হবে। চাইলে চিত্রের ‘২’ দ্বারা চিহ্নিত ‘Clear Seat’ এ চাপ দিয়ে আসন বাতিল করে অন্য আসনও নির্ধারণ করতে পারবেন। সবকিছু ঠিক থাকলে চিত্রের ‘৩’ দ্বারা চিহ্নিত ‘Buy Ticket’ অংশে চাপ দিলেই নিচের দৃশ্যটি দেখতে পাবেন।
উপরের চিত্রটি মূলত রেলওয়ের নীতিমালা। টিকিট কাটতে গেলে যা আপনাকে মানতেই হবে। নীতিমালা মেনে নিলে ‘I Agree’ বাটনে ক্লিক করলেই চলে যাবেন ভাড়া পরিশোধের অংশে।
ধাপ ০৮ঃ ভাড়া পরিশোধ করা
ই-টিকিটের ভাড়া পরিশোধের জন্য রয়েছে ৬ টি উপায়। যার মাঝে রয়েছে ৩ টি ব্যাংক, ২টি অনলাইন মানি ট্রান্সফার সার্ভিস এবং আমেরিকান এক্সপ্রেস।
ব্যাংকগুলো হলো যথাক্রমেঃ
১) ডাচ-বাংলা ব্যাংক
২) ব্র্যাক ব্যাংক
৩) সিটি ব্যাংক
ডাচ-বাংলা ব্যাংকের ‘নেক্সাস’ কার্ড, ব্র্যাক ব্যাংকের VISA/Master Card অথবা সিটি ব্যাংকের VISA/Master Card ব্যবহার করে ভাড়া পরিশোধ করতে পারবেন। এছাড়াও থাকছে American Express কার্ড ব্যবহারের সুবিধা। তবে যদি আপনার কোন ব্যাংক অ্যাকাউন্টই না থাকে তাহলে অন্তত অনলাইন মানি ট্রান্সফার অ্যাপের মাধ্যমে আপনি ভাড়া পরিশোধ করতে পারবেন। আপাতত ডাচ-বাংলা ব্যাংকের রকেট ও ব্র্যাক ব্যাংকের বিকাশের সাহায্যে এটি করা সম্ভব হচ্ছে।
ধাপ ০৯ঃ টিকেট ভেরিফাই (Verify) করা
টিকেটটি কাটা সঠিক হয়েছে কিনা তা চাইলে আপনি ভেরিফাই করতে পারবেন। আর এটি শুধু অনলাইন টিকেট নয় বরং কাউন্টার থেকে আগে কিনে রাখা টিকেটের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। ই-টিকেটের ক্ষেত্রে টিকেট কেনার পর আপনার অ্যাকাউন্টের সাথে সংশ্লিষ্ট ইমেইল আইডিতে একটি ইমেইল পাঠানো হবে। ইমেলটিতে আপনার টিকেট থাকবে এবং টিকেটের সাথে একটি পিন (PIN) থাকবে। এটি মূলত একটি নাম্বার। আর কাউন্টার থেকে কেনা টিকেটে সরাসরি টিকেট নাম্বার দেওয়া থাকবে। দু’ধরনের টিকেট ভেরিফাই করতেই আপনাকে যেতে হবে ই-টিকিটিং পরিষেবা ওয়েবসাইটের টপবার এ থাকা ‘Verify Ticket’ অপশনে।
চিত্র ‘১৫’ এর ‘১’ দ্বারা চিহ্নিত ‘Online Printed’ অংশে চাপ দিলেই দুটি অপশন দেখতে পাবেন। একটি হলো ‘Online Printed’ আরেকটি হলো ‘Counter Printed’। আপনার টিকেটটি যে ধরনের সেটি নিশ্চিত করে চিত্রের ‘২’ দ্বারা চিহ্নিত স্থানে টিকেটের পিনটি লিখুন। এবং ‘৩’ দ্বারা চিহ্নিত স্থানে অ্যাকাউন্টের সাথে সংশ্লিষ্ট মোবাইল নাম্বারটিও লিখুন। এবার ‘৪’ দ্বারা চিহ্নিত ‘Verify’ অপশনে চাপ দিলেই আপনার টিকেটটি যাচাই করতে পারবেন। উল্লেখ্য, কাউন্টার থেকে প্রিন্ট করা টিকেটের জন্য শুধু টিকেট নাম্বারটি প্রবেশ করালেই চলবে।
ধাপ ১০ঃ টিকেট সংগ্রহ করা
পূর্বেই বলেছি যে, অনলাইনে টিকেট কেনার পরে ইমেইল এ আপনার টিকেটটি চলে আসবে। সেই টিকেটটি বাসায় বসে অথবা নিকটস্থ কোন দোকান থেকে প্রিন্ট করিয়ে নিন। তারপরে যাত্রা শুরুর আগে নির্ধারিত স্টেশন থেকে ফটো আইডি এবং ই-টিকেটে প্রদত্ত ‘Ticket Print Information’ প্রদান করে কাউন্টার থেকে ছাপানো টিকেট সংগ্রহ করে নেবেন। ব্যাস হয়ে গেলো, এবার আপনি সেই টিকেট দিয়ে নিশ্চিন্তমনে যাত্রা করুন।
রেলসেবা অ্যাপের মাধ্যমে ট্রেনের টিকেট কাটার নিয়ম
এতক্ষণ আপনারা জানলেন ওয়েবসাইটের সাহায্যে টিকেট কাটার নিয়ম। কিন্তু অনেকের কাছেই কম্পিউটার নেই এবং মোবাইলের ব্রাউজার দ্বারা ব্রাউজিং করে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন না। তাদের সুবিধার্থে রেল মন্ত্রণালয় একটি মোবাইল অ্যাপ তৈরি করেছে। চাইলে সেই অ্যাপটির সাহায্যেও খুব সহজেই টিকেট ক্রয় করা সম্ভব। চলুন জানা যাক অ্যাপের সাহায্যে টিকেট কাটার প্রক্রিয়া।
ধাপ ০১ঃ রেলসেবা অ্যাপ ডাউনলোড
বাংলাদেশ রেলওয়ে ই-টিকিট কেনার জন্য যেই অ্যাপটি তৈরি করেছে তার নাম হলো ‘Rail Sheba’। এই অ্যাপটি তৈরি করেছে ‘Computer Network Systems Limited’। রেলসেবা অ্যাপটি ডাউনলোড করতে প্রথমেই আপনার ফোনের গুগল প্লে স্টোর (Play Store) এ চলে যান। যদি আইফোন ব্যবহারকারী হয়ে থাকেন তাতেও সমস্যা নেই। অ্যাপটি অ্যাপল স্টোরেও বিদ্যমান। যাই হোক, প্লে স্টোর বা অ্যাপল স্টোর চালু করে ‘Rail Sheba’ লিখে সার্চ করুন। সবার প্রথমেই চলে আসার কথা। ‘Computer Network Systems Limited’ এর নাম দেখে নিশ্চিত হয়ে নিন।
চিত্র ‘১৬’ এর ‘১’ দ্বারা চিহ্নিত ‘Install’ বাটনে ক্লিক করুন। অ্যাপটির সাইজ মাত্র ২০ মেগাবাইট। ইন্সটল হয়ে গেলে অ্যাপটি অন করুন। নিচের চিত্রের মতো একটি দৃশ্য ভেসে উঠবে।
ধাপ ০২ঃ অ্যাকাউন্ট খোলা
আপনার যদি ইতোমধ্যে অ্যাকাউন্ট থেকে থাকে তাহলে আবার অ্যাকাউন্ট খোলার কোন প্রয়োজন নেই। সরাসরি লগ ইন করুন। তবে অ্যাকাউন্ট না থেকে থাকলে ও অ্যাপ দিয়ে অ্যাকাউন্ট খুলতে চাইলে উপরের চিত্র ‘১৭’ এর ‘১’ দ্বারা চিহ্নিত ‘Sign Up’ নামক অংশে চাপ দিন। নিচের চিত্র ‘১৮’ এর মতো একটি উইন্ডো খুলে যাবে এবং সঠিক ভাবে নিজের নাম, মোবাইল নাম্বার, ইমেইল এড্রেস ও পাসওয়ার্ড দিয়ে অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে। ওয়েবসাইটের মতোই আপনার মোবাইল নাম্বারে একটি পিন আসবে যা প্রবেশ করিয়ে মোবাইল নাম্বারটি ভেরিফাই করে নিতে হবে।
ধাপ ৩ঃ অ্যাকাউন্টে তথ্যাবলী পূর্ণ করা ও পরিবর্তন করা
ওয়েবসাইটের মতোই এখানেও আপনাকে আরো তথ্যাবলী প্রবেশ করাতে হবে। অর্থাৎ নিজের জন্মতারিখ, লিঙ্গ ও জাতীয় পরিচয় পত্রের নাম্বার অথবা জন্ম সনদের নাম্বার। এসকল তথ্য সঠিকভাবে পূরণ করার পরই আপনার অ্যাকাউন্টটি পুরোপুরি সচল হবে। আর যদি কোন তথ্য পরিবর্তন করতে চান তবে অ্যাপের উপরের বাম দিকে অবস্থিত মেনু হতে ‘Settings’ এ চাপ দিলেই নিচের চিত্র ‘১৯’ এর মতো অ্যাকাউন্টের তথ্যাবলি, পাসওয়ার্ড, মোবাইল নাম্বার অথবা ইমেইল এড্রেস পরিবর্তনের অপশন দেখতে পাবেন।
ধাপ ০৪ঃ যাত্রার যাবতীয় তথ্যাবলী প্রদান
এবার পালা যাত্রা শুরুর স্থান, গন্তব্য ও যাত্রার দিনক্ষণ ঠিক করা। সেটি করতে প্রথমেই অ্যাকাউন্টে লগ ইন করতে হবে। লগ ইন করার পর চিত্র ‘২০’ এর ‘১’ দ্বারা চিহ্নিত ‘Purchase’ বাটনে এ চাপ দিতে হবে।
‘Purchase’ বাটনে এ চাপ দিলেই নিচের চিত্র ‘২১’ এর মতো ‘Ticket Purchase’ নামক উইন্ডো খুলে যাবে। সেখান থেকে যথাক্রমে নিজের যাত্রা শুরুর স্থান, গন্তব্যস্থল ও যাত্রার দিন নির্ধারণ করে ‘১’ দ্বারা চিহ্নিত ‘Search Train’ বাটনে এ চাপ দিতে হবে।
‘Search Train’ বাটনে চাপ দিলেই ওইদিনের সকল ট্রেনের একটি তালিকা আপনার সামনে চলে আসবে। এক্ষেত্রে আমি ঠিক করেছি ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম। যাত্রার দিন ও গন্তব্যের ওপর নির্ভর করে ট্রেনের সংখ্যা ও ধরণ পরিবর্তিত হতে পারে।
উপরের চিত্রের মতো ট্রেনের তালিকা থেকে এখন আপনাকে ঠিক করতে হবে আপনি কোন ট্রেনে করে যাত্রা করতে চান। আমি “SONAR BANGLA” ট্রেনটিই ঠিক করেছি। এবার আপনাকে চিত্র ‘২২’ এর ‘১’ দ্বারা চিহ্নিত ‘Select Class’ মেনুতে চাপ দিয়ে কোন শ্রেণীতে ভ্রমণ করতে চান তা ঠিক করতে হবে। একইভাবে ‘২’ দ্বারা চিহ্নিত স্থানে চাপ দিয়ে বয়স্ক যাত্রীর সংখ্যা ও ‘১’ দ্বারা চিহ্নিত স্থানে চাপ দিয়ে শিশু যাত্রীর সংখ্যা নির্ধারণ করতে হবে। এবার ‘১’ দ্বারা চিহ্নিত ‘Select Seat’ বাটনে চাপ দিতে হবে।
ধাপ ০৫ঃ আসন নির্ধারণ
ওয়েবসাইটের মতোই এখানেও আপনি আসন নির্ধারণের সুযোগ পাবেন। তবে এখানে পূর্বেই আপনাকে ঠিক করে নিতে হবে যে আপনি কোন বগিতে ভ্রমণ করবেন। বগি নির্ধারণের পরেই আপনাকে আসন বিন্যাস দেখানো হবে এবং সেখান থেকে আপনি আপনার আসন পছন্দ করবেন। আসন নির্ধারণ করে নিচের চিত্র ‘২৩’ এর ‘১’ দ্বারা চিহ্নিত ‘Continue’ বাটনে চাপ দেবেন।
ধাপ ০৬ঃ ভাড়া পরিশোধ ও টিকিট সংগ্রহ
আসন নির্ধারণ করে ‘Continue’ বাটনে চাপ দিলেই একটি পেজে আপনার যাত্রার যাবতীয় তথ্য দেখানো হবে। সেখানে ‘Pay Now’ বাটনে ক্লিক করলেই ভাড়া পরিশোধের অপশনগুলো দেখতে পাবেন। ওয়েবসাইটের মতো এখানেও ডাচ-বাংলা ব্যাংক, সিটি ব্যাংক ও ব্র্যাক বাংকের সাহায্যে ভাড়া পরিশোধ করতে পারবেন। সাথে আছে ‘American Express’, রকেট অথবা বিকাশের সাহায্যেও ভাড়া পরিশোধের সুবিধা।
ভাড়া পরিশোধ করার পরপরই সংশ্লিষ্ট ইমেইলে টিকেট চলে আসবে যা প্রিন্ট করিয়ে রাখবেন। প্রিন্ট কপিটা যাত্রার পূর্বে টিকেট কাউন্টারে দেখালেই আসল ছাপানো টিকেট আপনাকে দিয়ে দেবে।
ট্রেনের কেবিন ভাড়া করার নিয়ম
ট্রেনের কেবিন গুলোকে বোঝানো হয় ‘AC_B’ দ্বারা। এর অর্থ এসি বার্থ (AC Berth)। ট্রেনের কেবিন ভাড়া করতে হলে এসি কেবিন গুলোই ভাড়া করতে হবে। প্রতিটি কেবিনে ৬ জন যাত্রী বসতে পারবেন। কেবিন গুলো খুবই পরিষ্কার-পরিছন্ন ও শীততাপ নিয়ন্ত্রিত হওয়ায় খুবই আরামদায়ক।
ট্রেনের কেবিন ভাড়া করতে হলেঃ
ধাপ ১ঃ প্রথমে সাধারন ভাবে ট্রেনের টিকিট কাটার মতই ওয়েবসাইটে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।
ধাপ ২ঃ সাইটের হোমপেজে ভ্রমণের তথ্যাবলী পূরণের সময় ‘Class’ এর স্থলে ‘AC_B’ নির্ধারণ করে দিতে হবে
ধাপ ৩ঃ বাকি প্রক্রিয়াটি সাধারণভাবে অনলাইনে টিকেট কাটার মতই সম্পন্ন করতে হবে।
আশা করি, ট্রেনের কেবিন ভাড়া করার নিয়ম আপনার কাছে এবার পরিস্কার। যদি কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে নিচে প্রশ্নোত্তর অংশ দেখতে পারেন অথবা কমেন্ট বক্সে জিজ্ঞাসা করতে পারেন।
রেলসেবা অ্যাপ এর আরও কিছু পরিষেবা
এই লেখাটিতে মূলত ওয়েবসাইটের সাহায্যে কিভাবে টিকেট কাটবেন তা বিস্তারিত ভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। আর তারই আলোকে অ্যাপের সাহায্যে টিকেট ক্রয়ের প্রক্রিয়াটাও ব্যাখ্যা করা হয়েছে। তবে রেলসেবা মোবাইল অ্যাপের বিশেষ কিছু সুবিধা উল্লেখ না করলেই নয়।
১) লিখিত অভিযোগ জানানো
ওয়েবসাইটে সরাসরি লিখিত অভিযোগ জানানোর তেমন কোন সুযোগ নেই। অভিযোগ জানাতে হলে সরাসরি ফোন করতে হয়। কিন্তু মোবাইল অ্যাপে রয়েছে ‘Complain’ সেকশন। এই সেকশন হতে আপনি সহজেই অভিযোগের ধরণ ঠিক করতে পারবেন ও ২০০ অক্ষরের মধ্যে অভিযোগটি লিখে দাখিল করতে পারবেন। শুধু তাই নয়, চাইলে অভিযোগের সাথে প্রমাণস্বরুপ ছবি বা ভিডিও সংযুক্ত করতে পারবেন।
২) ট্রেনের ভেতরের ছবি দেখা
নিরাপদে ট্রেন ভ্রমন নিশ্চিত করতে যাত্রার শুরুর পূর্বেই আসন বা কেবিনের ছবি কেমন হবে তা জেনে নেওয়া যাবে। আপনি হয়তো ভাবছেন, এও কি সম্ভব? হ্যাঁ, সম্ভব! মোবাইল অ্যাপের ‘Coach View’ সেকশনের সাহায্যে সহজেই আপনি যেকোনো ট্রেনের ভেতরের অবস্থা দেখতে পারবেন। এক্ষেত্রে আপনার সেই ট্রেনের নাম এবং আপনি কোন শ্রেণীতে ভ্রমণ করবেন সেটি নির্ধারণ করে দিতে হবে। এরপর ‘Submit’ বাটনে চাপ দিলেই আপনাকে সেই কোচের ছবি দেখানো হবে।
৩) ট্রেনের খাবার সম্বন্ধে জানা
ট্রেনে ভ্রমণের সময় অনেক যাত্রীকেই ট্রেনের খাবারের ওপর নির্ভর করতে হয়। আর সেটি মাথায় রেখেই অ্যাপটিতে রয়েছে ‘Food’ সেকশন। এখান থেকে আপনি গত ভ্রমণগুলোতে কি কি অর্ডার করেছেন তার হিসাব যেমন রাখা সম্ভব তেমনি কোন ট্রেনে কারা খাবার বিক্রি করে তাদের প্রতিষ্ঠানের নাম এবং মোবাইল নাম্বারও পাওয়া সম্ভব।
৪) ভ্রমণের মান সম্পর্কে জানানো
‘Rail Sheba’ অ্যাপটির সাহায্যে আপনার বিগত ভ্রমণগুলোর মান কেমন হয়েছে তাও রেল কর্তৃপক্ষকে জানাতে পারবেন আপনি। অ্যাপ অ্যাকাউন্টের সাহায্যে কোন টিকেট কেটে যাত্রা করলে সেই যাত্রা শেষে যাত্রার মান সম্পর্কেও মতামত জানাতে পারবেন আপনি। এছাড়া কি ধরনের সমস্যা হয়েছিলো তাও উল্লেখ করতে পারবেন। এর জন্য রয়েছে অ্যাপের ‘Rating’ সেকশন।
এছাড়াও ‘Rail Sheba’ অ্যাপটিতে রয়েছে নানা গুরুত্বপূর্ণ ফোন নাম্বারসহ বিভিন্ন বড় বড় রেল স্টেশনের নাম্বার। একইসাথে টিকেট ভেরিফিকেশনের সুবিধাও রয়েছে। সব মিলিয়ে এই ‘Rail Sheba’ অ্যাপটি ওয়েবসাইট থেকে কোন অংশে কম নয় বরং এটিকে বেশ সফল অ্যাপই বলা চলে বৈকী! আর তাই আপনি চাইলে আপনার পছন্দমতো ওয়েবসাইট অথবা মোবাইল অ্যাপ যেকোনোটি দিয়েই টিকিট কাটতে পারেন।
সচারচর জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন
প্রশ্ন-০১ঃ অ্যাকাউন্ট খোলা ছাড়া সরাসরি কি ই-টিকেট কাটতে পারবো?
উত্তরঃ না। টিকিট কাটতে হলে আপনার পরিচয় নিশ্চিত করতে হবে। তাই ই-টিকেট কাটতে অ্যাকাউন্টের বিকল্প নেই।
প্রশ্ন-০২ঃ অ্যাকাউন্ট খোলা ছাড়া কি আমি কাউন্টার থেকে কেনা টিকেট ভেরিফাই করতে পারবো?
উত্তরঃ না। অ্যাকাউন্ট ছাড়া কাউন্টার থেকে টিকেট কেনা গেলেও ভেরিফাই করতে অ্যাকাউন্ট লাগবে।
প্রশ্ন-০৩ঃ অ্যাকাউন্ট খোলার সময় মোবাইল ভেরিফিকেশন কোডটি প্রবেশ করাতে পারি নি। এখন কি করণীয়?
উত্তরঃ রেলসেবার হেল্পলাইন “৩৩৩” নাম্বারে ফোন করে আপনার সমস্যার কথা বলুন।
প্রশ্ন-০৪ঃ আমি যদি অনেক বেশি টিকেট কাটতে চাই তাহলে কি করবো?
উত্তরঃ নির্ভর করে আপনি কয়টি টিকেট কাটতে চান। ধরা যাক ১০ টি টিকেট কাটবেন। সেক্ষেত্রে অন্তত ৩ জনের অ্যাকাউন্ট প্রয়োজন হবে। কারণ একটি অ্যাকাউন্টে সর্বোচ্চ ৪টি টিকেট একবারে কেনা যায়।
প্রশ্ন-০৫ঃ এক সপ্তাহে কতবার টিকেট কাটতে পারবো?
উত্তরঃ এক সপ্তাহে সর্বোচ্চ দুইবার টিকেট কাটতে পারবেন। এক্ষেত্রে দুইবারে মাত্র দুইটি টিকেট কেটেছেন নাকি ৮টি টিকেট কেটেছেন তা মুখ্য নয়।
প্রশ্ন-০৬ঃ টিকেট কেটেছি এবং টাকাও কাটা হয়েছে কিন্তু ইমেইল আসে নি। এক্ষেত্রে কি করণীয়?
উত্তরঃ আপনার অ্যাকাউন্টের ‘History’ ট্যাবে যান। ‘Upcoming Journeys’ সেকশনে টিকেটের বিস্তারিত থাকবে। সেখান থেকেও চাইলে একটি PDF কপি ডাউনলোড করা সম্ভব।
প্রশ্ন-০৭ঃ আমার টাকা কেটেছে কিন্তু টিকেট কাটা সম্পন্ন হয় নি। এক্ষেত্রে কি করণীয়?
উত্তরঃ এক্ষেত্রে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ৮ কর্মদিবসের মধ্যে আপনার টাকা ফেরত আসার কথা। না আসলে হেল্পলাইন ৩৩৩ নাম্বারে কল করে বিস্তারিত বলুন।
প্রশ্ন-০৮ঃ আমি টিকেট কেটেছি কিন্তু যাত্রার দিন পরিবর্তন করতে চাই। এক্ষেত্রে কি করণীয়?
উত্তরঃ এক্ষেত্রে করণীয় কিছু নেই। টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য আবেদন করুন এবং নতুন টিকেট কাটুন।
প্রশ্ন-০৯ঃ কাউন্টার থেকে ছাপানো টিকেট সংগ্রহ না করে শুধু অনলাইন টিকেটের প্রিন্ট কপি দিয়ে কি যাত্রা করা সম্ভব?
উত্তরঃ এটি না করাই শ্রেয়। দয়া করে যাত্রার আগে ছাপানো টিকেট সংগ্রহ করে নিন।
প্রশ্ন-১০ঃ যাত্রার সময় কি জাতীয় পরিচয়পত্র সাথে থাকা বাধ্যতামূলক?
উত্তরঃ না। টিকেট কাটার সময়ই আপনার পরিচয় নিশ্চিত করে নেওয়া হবে। যাত্রার সময় শুধু টিকেটটি সাথে থাকলেই চলবে।
ছবি এবং তথ্যসূত্রঃ
১) লিঙ্কঃ Bangladesh Railway
২) লিঙ্কঃ ই-টিকিটিং সিস্টেম