পরিচয়পত্র হারিয়ে গেলে করনীয় !!

 

পরিচয়পত্র হারিয়ে গেলে যা করবেন 

  • যত দ্রুত সম্ভব নিকটস্থ থানায় গিয়ে পুলিশের কাছে সাধারণ ডায়েরি করুন এবং এই সাধারণ ডায়েরির কাগজটি সংরক্ষণ করে রাখুন। এটি আপনার পরিচয়পত্র হারিয়ে গিয়েছে এবং এটি ব্যবহার করে পরবর্তীতে সংঘটিত কোনো অপরাধের দায়ভার যে আপনার না, তার প্রমাণ হিসেবে কাজ করবে। এছাড়াও যদি কেউ পরিচয়পত্রটি খুঁজে পেয়ে থানায় জমা দেয় সেক্ষেত্রে আপনি তা সহজে ফেরত পেতে পারবেন। 
  • সাধারণ ডায়েরি বা জিডির মূল কপিটি সহ জাতীয় পরিচয়পত্র পুনরায় উত্তোলনের জন্য থানা/উপজেলা নির্বাচন অফিসারের কার্যালয় এ আবেদন করতে হবে। অথবা ঢাকার জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগে আবেদন করতে হবে। আবেদনের প্রেক্ষিতে আপনাকে জাতীয় পরিচয়পত্র পুনরায় ইস্যু করে দেওয়া হবে। 
  • ভোটার আইডি কার্ড রি-ইস্যু করার ক্ষেত্রে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ফি পরিশোধ করতে হয়। প্রথমবার রি-ইস্যু করার জন্য আবেদন করতে ২০০ টাকা জমা দিতে হবে। জরুরি ভিত্তিতে (৭ কার্যদিবস) এর মধ্যে পেতে চাইলে ৩০০ টাকা জমা দিতে হবে। ২য় বার আবেদনের ক্ষেত্রে যথাক্রমে ৩০০ টাকা এবং জরুরি ভিত্তিতে চাইলে ৫০০ টাকা জমা দিতে হবে। এরপর পরবর্তীতে যেকোনোবার আবেদনের ক্ষেত্রে ৫০০ টাকা জমা দিতে হবে এবং জরুরি ভিত্তিতে চাইলে ১০০০ টাকা জমা দিতে হবে। 

অনলাইনে জাতীয় পরিচয়পত্র পুনরায় পাওয়ার আবেদন করার নিয়ম

বর্তমানে জাতীয় পরিচয়পত্র হারিয়ে গেলে অনলাইনের মাধ্যমেই তা রি-ইস্যু করার আবেদন করা যায়। এরজন্য যা যা করতে হবেঃ

  • আপনাকে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে যেতে হবে। ওয়েবসাইটটি হলোঃ https://services.nidw.gov.bd/ ওয়েবসাইটটির ডানে উপরের দিকে ক্লিক করলে ভোটার তথ্য এর অপশন রয়েছে। সেখানে ক্লিক করে আপনার প্রয়োজনীয় তথ্য দিলে ভোটার তথ্য আসবে।
  • তখন উপর দিকে রি-ইস্যু নামক একটি অপশন পাওয়া যাবে। সেখানে ক্লিক করলে নতুন একটি ফর্ম ওপেন হবে। সেখানে আপনার ভোটার আইডি কার্ড এর নাম্বার বসাতে হবে এবং হারানোর পর যে জিডি করেছেন তার নাম্বার সংযুক্ত করতে হবে। 
  • যদি আপনার পরিচয়পত্র হারিয়ে না গিয়ে নষ্ট হয়ে থাকে তাহলে “নষ্ট হয়ে গিয়েছে” তে ক্লিক করবেন, সেক্ষেত্রে জিডি নাম্বার লাগবে না।
  • হারানো জাতীয় পরিচয়পত্র রি-ইস্যু করার জন্য অনলাইনে একটি ফর্ম থাকবে যা পূরণ করতে হবে। 
  • তারপর সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ফি পরিশোধ করতে হবে। ওয়েবসাইটে মোবাইল ব্যাংকিং সহ অন্যান্য যেসব উপায়ে টাকা পরিশোধ করা যায় তা দেওয়া আছে। সেই প্রক্রিয়ায় টাকা পরিশোধ করতে হবে। আপনাকে এসএমএস এর মাধ্যমে তা অবহিত করা হবে। 
  • টাকা পরিশোধের পর এসএমএস পেলে আপনি আপনার জাতীয় পরিচয়পত্রের অনলাইন কপি ডাউনলোড করতে পারবেন। হার্ডকপি পাওয়ার জন্য নিকটস্থ নির্বাচন অফিসে যোগাযোগ করতে হবে। 

শেষকথা

জাতীয় পরিচয়পত্র নাগরিক জীবনে অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। এটি হারিয়ে গেলে কি পদক্ষেপ নিবেন এবং কিভাবে রি-ইস্যু করতে পারবেন তা নিয়ে ভোগান্তিতে পড়েন অনেকেই। আজকের এ লেখাটির সাহায্যে জাতীয় পরিচয়পত্র রি-ইস্যু করার পদ্ধতি নিয়ে বিস্তারিত ধারনা পেয়েছেন এমনটাই আশা করি।

অনবরত জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী

১) হারিয়ে যাওয়া পরিচয়পত্র রি-ইস্যু ও তথ্য সংশোধন একসাথে করা যাবে কি? 

উত্তরঃ না। আগে হারিয়ে যাওয়া পরিচয়পত্র রি-ইস্যু করতে হবে এরপর আবার আলাদাভাবে তথ্য সংশোধনের জন্য আবেদন করতে হবে। দুটো একসাথে করা যাবেনা।

২) জাতীয় পরিচয়পত্র হারিয়ে গিয়েছে কিন্তু আইডি নাম্বার মনে নেই, এক্ষেত্রে কি করবো? 

উত্তরঃ এক্ষেত্রে আপনাকে সংশ্লিষ্ট থানা বা উপজেলা নির্বাচন অফিস থেকে আপনার ভোটার নাম্বার সংগ্রহের মাধ্যমে জাতীয় পরিচয়পত্র এর নাম্বার বের করতে হবে। এরপর সেই নাম্বার ব্যবহার করে পরিচয়পত্র রি-ইস্যু করার আবেদন করতে হবে।

৩) জাতীয় পরিচয়পত্র রি-ইস্যু করার পর পুরাতন পরিচয়পত্র খুঁজে পেলে কি করবো?

উত্তরঃ জাতীয় পরিচয়পত্র রি-ইস্যু হয়ে যাওয়ার পর নতুন ইস্যুকৃত কার্ডটিই আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র, তাই পুরাতনটির আর কোন প্রয়োজন হবেনা। সেটি নষ্ট করে ফেলুন। 

৪) জাতীয় পরিচয়পত্র হারিয়ে গেলে কতদিনের মধ্যে রি-ইস্যুকৃত পরিচয়পত্র পাওয়া যাবে?

উত্তরঃ বর্তমানে সঠিক তথ্য পূরণ ও ফি পরিশোধের মাধ্যমে অনলাইন কপি খুব দ্রুতই পাওয়া যায়। তবে হার্ডকপি অর্থাৎ আইডি কার্ড পাওয়ার জন্য কয়েকদিন সময় লাগে। সাধারণ ফি প্রদান করলে ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে এবং জরুরি ভিত্তিতে প্রাপ্তির জন্য ফি প্রদান করলে ৭ কার্যদিবসের মধ্যেই তা পাওয়া যাবে। 

নবীনতর পূর্বতন