নির্বাচন কমিশন বাংলাদেশ কি কি সেবা প্রদান করে?


বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন অনলাইন ও অফলাইন দুই মাধ্যমেই বাংলাদেশী নাগরিকদের সেবা দিয়ে থাকে। যে সকল সেবা তারা দিয়ে থাকেঃ

১) নির্বাচন পর্যবেক্ষণ

বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন এ দেশের সকল সরকারি নির্বাচন পরিচালনা ও তত্ত্বাবধায়ন করে। যে সকল নির্বাচন, নির্বাচন কমিশনের তত্ত্বাবধায়নে রয়েছেঃ 

  • রাষ্ট্রপতি নির্বাচন
  • জাতীয় সংসদ নির্বাচন 
  • সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন
  • জেলা পরিষদ নির্বাচন
  • উপজেলা পরিষদ নির্বাচন 
  • পৌরসভা নির্বাচন
  • ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন 

এই ৭ ধরনের নির্বাচন বাংলাদেশের যে প্রান্তেই হোক না কেন তা বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের অধীনে। নির্বাচন সুষ্ঠ ভাবে পরিচালনা করতে নির্বাচন কমিশন ‘নির্বাচন পর্যবেক্ষণ নীতিমালা’ অনুযায়ী পর্যবেক্ষক নিয়োগ দিয়ে থাকে। আবেদনকারী সংস্থাকে পূর্ণাঙ্গ ভাবে যাচাই এর পর নির্বাচন কমিশন ওই সংস্থাকে পর্যবেক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেয়। যেকোনো বাংলাদেশী নাগরিকের পর্যবেক্ষক হওয়ার যোগ্যতা নূন্যতম ২৫ বছর বয়স ও এস. এস. সি. পাশ। তবে কোন রাজনৈতিক দলের সাথে যুক্ত ব্যাক্তি পর্যবেক্ষক হতে পারবেন না। পর্যবেক্ষকের রিপোর্ট অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন যেকোনো নির্বাচনের সুষ্ঠতা যাচাই করে। 

২) নির্বাচনী আইন প্রণয়ন

নির্বাচনী আইন প্রণয়ন, সংশোধন ও তা কার্যকর করার দায়িত্বও বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের। রাষ্ট্রপতি নির্বাচন থেকে শুরু করে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনেরও সমস্ত আইন নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে প্রণীত হয়। এক্ষেত্রে প্রত্যেক নির্বাচনের জন্য আলাদা আলাদা আইন রয়েছে। তার পাশাপাশি প্রয়োজনে প্রচলিত নির্বাচনী আইনে সংশোধনী এনেও তা কার্যকর করার ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনের রয়েছে। মূলত যে ধরনের আইন নির্বাচন কমিশন প্রণয়ন করে থাকেঃ

  • সকল নির্বাচনের ‘নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালা’। 
  • সকল নির্বাচনের ‘নির্বাচনী আচরণ বিধিমালা’। 
  • রাষ্ট্রপতি নির্বাচন ব্যাতীত বাকি সকল নির্বাচনের ‘স্বতন্ত্র প্রার্থী বিধিমালা’। 
  • ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনের সাহায্যে নির্বাচনী বিধিমালা। 
  • সকল প্রকার ‘স্থানীয় সরকার আইন’। অর্থাৎ সিটি কর্পোরেশন, জেলা পরিষদ, পৌরসভা, উপজেলা পরিষদ ও ইউনিয়ন পরিষদ আইন। 

এছাড়াও জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন, নির্বাচন কমিশন নিয়োগ বিধিমালা, নির্বাচন কর্মকর্তা আইন ও বিদেশী পর্যবেক্ষক নীতিমালাও নির্বাচন কমিশন প্রণয়ন করে থাকে।

৩) রাজনৈতিক দল নিবন্ধন 

প্রত্যেক নাগরিকের অধিকার রয়েছে কোনো রাজনৈতিক দলের সাথে সংযুক্ত থাকা বা রাজনৈতিক দল খোলার। তবে একটি রাজনৈতিক দল বৈধ ভাবে খুলতে গেলে অবশ্যই বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের স্মরণাপন্ন হতে হবে। কারণ শুধু বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনই কোনো রাজনৈতিক দলকে নিবন্ধিত করার অধিকার রাখে। এক্ষেত্রে “রাজনৈতিক দল নিবন্ধন বিধিমালা, ২০২০” অনুযায়ী ফরম পূরণ করে নির্বাচন কমিশনের সচিব বরাবর জমা দিতে হবে। উল্লেখ্য বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইট অনুযায়ী বাংলাদেশে বর্তমানে মোট ৪৪টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল রয়েছে।    

রাজনৈতিক দল নিবন্ধন ছাড়াও নির্বাচন কমিশন সকল রাজনৈতিক দলের অডিট রিপোর্ট ও নির্বাচনী ব্যয় বিবরণী পর্যবেক্ষণ করে থাকে।

৪) ভোটার নিবন্ধন

দেশের নাগরিকদের ভোটার হিসেবে নিবন্ধন করার দায়িত্ব বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের। “ভোটার তালিকা বিধিমালা, ২০১২” অনুযায়ী ভোটার তালিকা করা হয়ে থাকে। এর ফলে প্রত্যেক নাগরিক ভোটদানের ক্ষমতা লাভ করে।

৪.১) মাঠ পর্যায়ে নিবন্ধন

মাঠ পর্যায়ে নিবন্ধনের জন্য প্রথমে নির্বাচন কমিশনের অধীনে সুপারভাইজার, সহকারী রেজিস্ট্রেশন অফিসার ও তথ্য সংগ্রহকারী নিয়োগ দেওয়া হয়। সাধারণত মাঠ পর্যায়ে প্রতি ৩০০-৪০০ জন ভোটারের জন্য একজন তথ্য সংগ্রহকারী থাকেন। প্রতি ৪ – ৫ জন তথ্য সংগ্রহকারী একজন সুপারভাইজারের অধীনে থাকেন। নির্বাচন কমিশনের অধীনে এই জনবলকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার পর সকল প্রাপ্তবয়ষ্ক নাগরিকের তথ্য সংগ্রহ করা হয়। নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র প্রণয়ন ও ভোটার হিসেবে অধিভুক্ত করা হয়। এই প্রক্রিয়া মূলত ছয়টি ধাপে সম্পন্ন হয়। 

  • তথ্য সংগ্রহ
  • ফরম পুনঃযাচাই করা
  • নিবন্ধন কেন্দ্রে তথ্য সংগ্রহ ও পরিচিত যাচাই
  • প্রতিবন্ধী, জেলখানার ভোটার, বাদ পড়া ভোটার ও অসুস্থদের নিবন্ধন
  • তথ্য উপজেলা সার্ভারে প্রক্রিয়াজাতকরণ
  • খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ ও চুড়ান্তকরণ

৪.২) অনলাইনে নিবন্ধন

মাঠ পর্যায়ে নিবন্ধনের পাশাপাশি কোন নাগরিক চাইলে অনলাইনেও ভোটার নিবন্ধন করতে পারবে। অনলাইনে ভোটার নিবন্ধন করতেঃ

ধাপ ১ঃ বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের নির্দিষ্ট সাইটে যেতে হবে। 

ধাপ ২ঃ ধাপে ধাপে রেজিস্ট্রেশন ফর্মের সকল তথ্য পূরণ করতে হবে। 

ধাপ ৩ঃ নিজের পূর্ণনাম ছাড়া বাকি সকল তথ্য বাংলায় ইউনিকোডে পূরণ করতে হবে। 

ধাপ ৪ঃ সকল ধাপ শেষ হলে প্রিভিউ এর সাহায্যে তথ্য গুলো আবারো যাচাই করে নিতে হবে। 

ধাপ ৫ঃ পিডিএফ ফাইল তৈরি করতে হবে এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সহ নিকটস্থ নির্বাচনী অফিসে তা জমা দিতে হবে। তখন আপনাকে কার্ডের একটি রশিদ দেওয়া হবে।

ধাপ ৬ঃ আপনার তথ্যাদি ও ঠিকানা যাচাই করে নিশ্চিত হলে আপনার কার্ড তৈরি করা হবে। 

ধাপ ৭ঃ কার্ডের রশিদ জমা দিয়ে কার্ড সংগ্রহ করতে হবে। 

সতর্কীকরণ

কার্ডে কোন প্রকার তথ্য ইচ্ছাকৃতভাবে ভুল দেওয়া হলে এবং তা প্রমাণিত হলে জেল বা জরিমানা অথবা দুটিই একসাথে হতে পারে। আবার একই ব্যাক্তি নাম ও বয়স বদল করে ভিন্ন ভিন্ন ভোটার কেন্দ্রে আবেদন করতে পারবে না। কারণ তার আঙ্গুলের ছাপ কেন্দ্রীয় ডাটাবেজে ধরা পড়বে। সে ক্ষেত্রে ওই ব্যাক্তির নামে ফৌজদারি মামলা করা হবে। 

৫) তথ্য পরিবর্তন

বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন প্রত্যেক নাগরিককে তার তথ্য পরিবর্তনের সুযোগ দিয়ে থাকে। তবে তার জন্য অবশ্যই নির্বাচন কমিশনের সাইটে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।

৫.১) রেজিস্ট্রেশন

রেজিস্ট্রেশন করতে নিজের জাতীয় পরিচয়পত্র নাম্বার অথবা ফর্ম নাম্বার এবং জন্ম তারিখ এর প্রয়োজন পড়বে। রেজিস্ট্রেশন করতে যেতে হবে নির্বাচন কমিশনের জাতীয় পরিচয়পত্র সংক্রান্ত সেবা দানকারী ওয়েবসাইটে। ওয়েবসাইটের ‘রেজিষ্টার’ সেকশনে প্রবেশের পরে নিম্নের চিত্রের মতো একটি দৃশ্য দেখতে পাবেন।নির্বাচন কমিশন বাংলাদেশ রেজিষ্ট্রেশন ফরম পূরণঅতঃপর ‘রেজিষ্ট্রেশন ফরম পূরণ করতে চাই’ বাটনে ক্লিক করলে নিচের চিত্রের মতো একটি ইন্টারফেস (Interface) আসবে। এর সাহায্যে অনলাইন সেবার জন্য রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন।একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন

৫.২) লগ ইন

রেজিস্ট্রেশন করার পর নিজের একাউন্টে লগ ইন করুন। লগ ইন করতে আপনার কার্ডের তথ্য ও মোবাইল নাম্বারের প্রয়োজন পড়বে। মোবাইল নাম্বরে পাঠানো এক্টিভেশন কোডের সাহায্যে লগ ইন করতে পারবেন। লগ ইন করার ইন্টারফেসটি নিম্নরূপ। লগ ইন করে আপনার আইডি কার্ডের তথ্য যাচাই করতে পারবেন এবং “ডাউনলোড” অপশন  থেকে জাতীয় পরিচয়পত্র ডাউনলোড করতে পারবেন।

রেজিস্ট্রেশন করার পর একাউন্টে লগ ইন

৫.৩) ফরম ডাউনলোড 

বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের সাইট থেকে দুটি ফরম ডাউনলোড করা যায়। সেগুলো হলোঃ

  • হারানো আইডি কার্ড উত্তোলনের আবেদন ফরম
  • আইডি কার্ড সংশোধনের জন্য আবেদন ফরম (উপজেলা/থানা নির্বাচন অফিসে আবেদনের জন্য) 

হারানো বা নষ্ট আইডি কার্ড উত্তোলনের জন্য প্রথমে নিকটস্থ থানায় জেনারেল ডায়রি (জিডি) করতে হবে। এরপরে সেই জিডির কপি সংযুক্ত করে ফরমের সাহায্যে আইডি কার্ড উত্তোলনের আবেদন করতে পারবেন।

অপরদিকে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধনের জন্য চাইলে উপজেলা/ থানা নির্বাচন অফিসে আবেদন করতে পারবেন। সেক্ষেত্রেও সাইট থেকে ফরমটি ডাউনলোড করে সেই ফর্মে আবেদন করতে হবে। উপযুক্ত দলিলাদি আবেদনের সাথে যুক্ত করতে হবে। তা যাচাই বাছাই এর পরে আবেদন মঞ্জুর হবে।

৬) জাতীয় পরিচয়পত্র নবায়ন

জাতীয় পরিচয়পত্রের মেয়াদ তা প্রদানের তারিখ থেকে ১৫ (পনের) বছর। জাতীয় পরিচয়পত্র নবায়ন করে রাখা অত্যন্ত জরুরী। কারণ জাতীয় পরিচয়পত্র আপনার নাগরিকত্বের প্রমাণ হিসেবে কাজ করে। জাতীয় পরিচয়পত্র নবায়ন করতে তার মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে বা পরে কমিশনের নিকট আবেদন করতে হবে।

৭) জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন

জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনের সময় প্রত্যেক নাগরিক ফরম – ২ এ যেসব তথ্য পূরণ করেন সেসব তথ্য থেকে বাংলায় ও ইংরেজিতে নিজের নাম, পিতার নাম, মাতার নাম, জন্ম তারিখ, ঠিকানা, রক্তের গ্রুপ ও নিজের স্বাক্ষর ইত্যাদি তথ্য জাতীয় পরিচয়পত্রে লেখা হয়। জাতীয় পরিচয়পত্রের এসব তথ্যের সংশোধন “জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন” হিসেবে গণ্য। এক্ষেত্রে সাধারণ বা জরুরীর জন্য আলাদা চার্জ নেই।

8) তথ্য অধিকার নিশ্চিতকরণ

বর্তমান বিশ্বে তথ্যকে একটি সম্পদ হিসেবে গণ্য করা হয়। তথ্যের অবাধ ব্যবহার নিশ্চিত করতেই সৃষ্টি করা হয়েছে “তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯”। এই আইন অনুসারে প্রত্যেক নাগরিকের অধিকার রয়েছে তথ্য জানার। বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন নাগরিকদের এই অধিকারটিও নিশ্চিত করে। নির্বাচন কমিশন থেকে তথ্যপ্রাপ্তির আবেদন ফরমটি ডাউনলোড করে চাইলে যে কেউ তথ্যের জন্য আবেদন করতে পারবেন। সেক্ষেত্রে “তথ্য প্রাপ্তি সংক্রান্ত বিধিমালা, ২০০৯” মেনে প্রত্যেক নাগরিককে তথ্য সংগ্রহ করা হবে।

অন্যান্য পরিষেবা 

উপরিউক্ত সেবা গুলো ছাড়াও নির্বাচন কমিশন আরো নানা সেবা দিয়ে থাকে। যেমন নির্বাচন সংক্রান্ত যে কোন টেন্ডার ও প্রেস রিলিজ দেওয়া, নির্বাচিত প্রার্থীদের নাম ঠিকানা সম্বলিত গেজেট প্রকাশ করা, সকল প্রার্থীদের নির্বাচনী প্রতীক নির্ধারণ করা, বিভিন্ন নির্বাচনের হলফনামা প্রস্তুত করা, সকল নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশ ও প্রতিবেদন তৈরি করা। নতুন ভোট দান পদ্ধতি (ইভিএম) সম্পর্কে ভিডিও বানানো ইত্যাদি সকল সেবাই নির্বাচন কমিশন দিয়ে থাকে। এছাড়াও অনলাইনে ভোটার তথ্য প্রদান, অনলাইনে এন. আই. ডি. নাম্বার প্রদান, স্মার্ট কার্ড বিতরণের তথ্য প্রদান, অনলাইনে আবেদন ট্র্যাক ও কার্ড অ্যাপ্লিকেশন ট্র্যাক ইত্যাদি পরিষেবাও নির্বাচন কমিশন দিয়ে থাকে। 

নির্বাচন কমিশন সচিবালয়

বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের জন্য রয়েছে আলাদা সচিবালয়। এর প্রধান হিসেবে থাকেন সরকারের একজন পূর্ণ সচিব। মূলত নির্বাচন সচিবালয়ই বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের সকল কাজ পরিচালনার মূল কেন্দ্র। এই সচিবালয়ের অধীনেই রয়েছে সকল বিভাগীয়/ আঞ্চলিক নির্বাচন কার্যালয়। এছাড়াও জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নির্বাচন কার্যালয়সমূহও এর অধীনে। ফলে এই সচিবালয় পরিণত হয়েছে দেশের সকল নির্বাচনী কাজের প্রাণকেন্দ্র হিসেবে। মূলত নির্বাচন সচিবালয়ের অধীনেই ভোটার তালিকা প্রণয়ন, নির্বাচনী এলাকা নির্ধারণ, কর্মসূচী প্রণয়ন, নির্বাচন পরিচালনা, ফল প্রকাশ ইত্যাদি সকল কাজ হয়ে থাকে। অর্থাৎ নির্বাচন সচিবালয় হলো নির্বাচন কমিশনের বৃহত্তম কার্যিক একক। 

বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন সচিবালয় এর ঠিকানাঃ বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন, নির্বাচন ভবন, প্লট নং-ই-১৪/জেড, আগারগাঁও, ঢাকা-১২০৭, বাংলাদেশ।

মাঠ পর্যায়ের কার্যালয়

নির্বাচনী সকল কাজ নির্বাচন সচিবালয় থেকে নিয়ন্ত্রিত হলেও প্রান্তিক অঞ্চলে মানুষের ভরসা মাঠ পর্যায়ের নির্বাচনী অফিস গুলো। আঞ্চলিক কার্যালয়ের অধীনে জেলা কার্যালয় ও তার অধীনে উপজেলা কার্যালয়ের সাহায্যেই দেশের সিংহভাগ নির্বাচনী সেবা দেওয়া হয়ে থাকে। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ তাদের উপজেলা নির্বাচনী অফিসেই ভোটার হিসেবে নিবন্ধিত হয়। এছাড়াও সকল নির্বাচনী  সেবা সেখান হতেই গ্রহণ করে। বর্তমানে নির্বাচন সচিবালয়ের অধীনে মোট ১০টি আঞ্চলিক নির্বাচনী কার্যালয় রয়েছে।

সেগুলো হলোঃ  ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, সিলেট, বরিশাল, রংপুর, ময়মনসিংহ, কুমিল্লা ও ফরিদপুর। 

এছাড়াও সারা দেশে নির্বাচনী সেবার পথ সুগম করতে বর্তমানে দেশে আঞ্চলিক, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের মোট ৬৯২টি নির্বাচন কার্যালয় রয়েছে। 

নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (ইটিআই)

নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট ১৯৯৫ সালে যাত্রা শুরু করা একটি প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটির মূল লক্ষ্য হলো নির্বাচনী কাজের সাথে জড়িত সকল কর্মকর্তা – কর্মচারীদের যথাযথ প্রশিক্ষণ দেওয়া। বিশেষত মাঠ পর্যায়ের ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা, উপজেলা পরিষদ, জেলা পরিষদ, সিটি কর্পোরেশন এবং জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা, ভোটার রেজিস্ট্রেশন কাজে নিয়োজিত তথ্য সংগ্রহকারী ও সুপারভাইজার ইত্যাদি সকল সংশ্লিষ্ট লোক এই প্রতিষ্ঠানে প্রশিক্ষণ পায়। এই প্রতিষ্ঠানের সাহায্যে একদিকে যেমন নির্বাচনী কর্মকর্তা – কর্মচারীদের পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধি পেয়েছে তেমনি বেড়েছে সচেতনতা ও স্বচ্ছতা।  

নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট নির্বাচন ভবনের পাশেই অবস্থিত। ইনস্টিটিউটি একটি সুদৃশ্য ১২ তলা ভবন।

ঠিকানাঃ প্লট-ই, ১৪/জেড এ, আগারগাঁও, শেরেবাংলা নগর। 

এই ইনস্টিটিউট এ রয়েছে ৪০০০ হাজারের অধিক বই, সাময়িকী ও গবেষণা পত্র সম্বলিত একটি গ্রন্থাগার। আরো রয়েছে ল্যাঙ্গুয়েজ ক্লাব, সম্মেলন কক্ষ, ক্যাফেটেরিয়া ও আবাসিক স্থান। বর্তমানে ২০ জন কর্মকর্তার অধীনে এই ইনস্টিটিউটটি পরিচালিত হচ্ছে। এবং এই ইনস্টিটিউটের দেওয়া প্রশিক্ষণের কারণে পরোক্ষ সেবা কিন্তু ভোগ করছে এ দেশের নাগরিকরাই।  

বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটসমূহ

বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট হলোঃ http://www.ecs.gov.bd/

বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের জাতীয় পরিচয়পত্র সংক্রান্ত সেবা দানকারী ওয়েবসাইট হলোঃ https://services.nidw.gov.bd/

বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনে যোগাযোগ

দেশব্যাপী নাগরিকদের অধিকার রক্ষা ও সুষ্ঠ সেবাদান নিশ্চিত করতে রয়েছে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনে যোগাযোগের ব্যবস্থা।

ফ্যাক্সঃ ৮৮০-২-৫৫০০৭৫১৫

নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তাবৃন্দের টেলিফোন নাম্বারঃ Bangladesh Election Commission (ecs.gov.bd)

মাঠপর্যায়ের অফিসসমূহের ঠিকানা ও টেলিফোন নাম্বারঃ Bangladesh Election Commission (ecs.gov.bd) 

জাতীয় পরিচয়পত্র সংক্রান্ত কোন সমস্যা বা জিজ্ঞাসা থাকলেঃ

ই-মেইলঃ info@nidw.gov.bd

হেল্পলাইনঃ 105, +88 01708-501261

যোগাযোগের সময়ঃ রবি-বৃহস্পতি, সকাল ৯:০০টা – বিকাল ৫:০০টা পর্যন্ত।

এছাড়াও জাতীয় পরিচয়পত্র সংক্রান্ত কোন মতামত জানাতে চাইলে আপনার নাম, মোবাইল নাম্বার ও ইমেইল এর সাহায্যে মতামত, অভিযোগ কিংবা পরামর্শ জানাতে পারবেন এই লিংকেঃ https://services.nidw.gov.bd/feedback

শেষ কথা

বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন বাংলাদেশের গণতন্ত্র রক্ষার মূল চাবিকাঠি। এ দেশের জনগণের নাগরিক তথা নির্বাচনী অধিকার রক্ষায় তারা সদা তৎপর। সংবিধান দ্বারা স্বীকৃত স্বতন্ত্র এই প্রতিষ্ঠানটির সেবা সম্পর্কে আপনারা জেনেছেন। আশা করি সকল প্রান্তিক কিংবা আঞ্চলিক নির্বাচনী কার্যালয় থেকে আপনাদের কাঙ্ক্ষিত সেবা লাভ করতে পারবেন।

 

 

তথ্যসূত্রঃ

১) লিংকঃ http://www.ecs.gov.bd/

২) লিংকঃ https://services.nidw.gov.bd/home 

৩) লিংকঃ বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন | উকিপিডিয়া

নবীনতর পূর্বতন